Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 10:51 pm

স্মরণীয়-বরণীয়

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী শিল্পোদ্যোক্তা আবদুল মোনেমের আজ তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি শিল্পগোষ্ঠী আবদুল মোনেম লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে এর অধীনে এক ডজনেরও বেশি প্রতিষ্ঠান আছে। 

আবদুল মোনেম ১৯৩৭ সালের ৫ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজেশ্বর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পঞ্চাশের দশকের শুরুর দিকে এসএসসি পাস করে তিনি ঢাকায় আসেন। অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ঠিকাদার হিসেবে তিনি প্রথমে কাজ শুরু করেন। ১৯৫৬ সালে মাত্র ২০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে নিজের প্রতিষ্ঠান আবদুল মোনেম লিমিটেড গড়ে তোলেন। তার নিজের নামে গড়া এএমএল কনস্ট্রাকশনস লিমিটেড হয়ে ওঠে দেশের অন্যতম শীর্ষ কনস্ট্রাকশনস ফার্ম। আবদুল মোনেম পেশায় একজন প্রকৌশলী ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি খাদ্য, পানীয়, চিনি পরিশোধনাগার, জ্বালানি, ফার্মাসিউটিক্যালসসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসায় সম্প্রসারিত করেন। ১৯৮২ সালে আইসক্রিম ইউনিটের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠা করেন বেভারেজ ইউনিট। এ গ্রুপের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ইগলু ফুডস, ড্যানিশ বাংলা ইমালশন লিমিটেড, এএম সিকিউরিটিজ ও ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, আবদুল মোনেম সুগার রিফাইনারি লিমিটেড, এএম এনার্জি, নোভাস ফার্মাসিউটিক্যালস, এএম অ্যাসফল্ট অ্যান্ড রেডিমিক্স কংক্রিট লিমিটেড, এএম অটো ব্রিকস লিমিটেড, ইগলু ডেইরি লিমিটেড ও মোনেম ইকোনমিক জোন। ব্যবসায়ের পাশাপাশি আবদুল মোনেম সমাজের বিপদগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে গড়ে তোলেন আবদুল মোনেম ফাউন্ডেশন। এ ফাউন্ডেশনে আব্দুল মোনেম  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিজ গ্রাম বিজেশ্বরে প্রায় ৫২ একর জমি দান করেন। যেখানে গড়ে উঠেছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। তার গড়া এ ফাউন্ডেশন দেশে বন্যা বা অন্য কোনো ধরনের বিপর্যয়ের সময় সহযোগিতা প্রদান করে থাকে। আবদুল মোনেম ব্যবসার বাইরে খেলাধুলায় অনুরাগী ছিলেন। তিনি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব (ঢাকা) (১৯৮৪-১৯৯৫) সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশে ব্যবসায়ী হিসাবে অবদানের জন্য নানা পুরস্কার অর্জন করেন। তার মধ্যে রাষ্ট্রপতি শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার, ২০১৪, বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সিআইপি (শিল্প) ২০১৩ ও ২০১৬,  বিজনেস পারসন অব দ্য ইয়ার ২০০৮, বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য। ২০২০ সালের ৩১ মে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা