স্মরণীয়-বরণীয়

জনপ্রিয় লেখক, রহস্য কাহিনীকার ডা. নীহাররঞ্জন গুপ্তের ১১২তম জন্মদিন আজ। তিনি বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র কিরীটী রায়ের স্রষ্টা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছেন। ডা. নীহাররঞ্জন গুপ্ত ১৯১১ সালের ৬ জুন তৎকালীন যশোরের (বর্তমান নড়াইল জেলার) লোহাগড়া উপজেলার ইতনায় জš§গ্রহণ করেন। তার পরিবার ছিল বিখ্যাত কবিরাজ বংশীয়। তিনি কলকাতায় কারমাইকেল মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাস করে লন্ডন থেকে চর্মরোগ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ছাত্রাবস্থায় তার বড় বোন পোকার কামড়ে মারা গেলে নিহাররঞ্জন  প্রচণ্ড কষ্ট পান ও এই রোগ সারানোর জন্য পরে তিনি সফল চিকিৎসক হয়ে ওঠেন।  দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ চলাকালে তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ও কাজের প্রয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি ও তার পরিবার স্থায়ীভাবে কলকাতায় স্থায়ী হন।

ডা. নীহাররঞ্জন গুপ্ত বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের খোঁজ-খবর নিয়মিত রাখতেন। ১৯৭৫ সালের পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নীহাররঞ্জনের সঙ্গে একবার দেখা করেন। নড়াইল জেলার ইতনায় তাদের বাড়ির নাম ছিল ‘আনন্দ অন্নদা কুটির’। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশের বিখ্যাত চিত্রকর এস এম সুলতান নীহাররঞ্জন গুপ্তের বাসভবনে শিশুস্বর্গ-২ প্রতিষ্ঠা করেন। বাড়িটি বর্তমানে সরকারি সম্পত্তির অধীনে।  ড. নীহাররঞ্জন গুপ্ত চিকিৎসক ছাড়াও লেখক হিসেবে সফলতা অর্জন করেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি রচনা করেন প্রথম  উপন্যাস ‘রাজকুমার’। একসময় তিনি শান্তিনিকেতনে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আশীর্বাদ গ্রহণসহ তার স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন। ইংল্যান্ডে অবস্থানকালীন তিনি গোয়েন্দা গল্প রচনায় উত্তরণ ঘটান এবং আগাথা ক্রিস্টির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ভারতে ফিরে এসে তিনি তার প্রথম গোয়েন্দা উপন্যাস কালোভ্রমর রচনা করেন। এতে তিনি গোয়েন্দা চরিত্রে কিরীটী রায়কে সংযোজন করেন, যা বাংলা গোয়েন্দা সাহিত্যে এক অনবদ্য সৃষ্টি। তার প্রায় ৪৫টি উপন্যাসকে চলচ্চিত্রায়ণ করা হয়েছে। বড়দের পাশাপাশি শিশুদের জন্যও তিনি গোয়েন্দা উপন্যাস রচনা করেন। তিনি শিশু সাহিত্য পত্রিকা সবুজ সাহিত্যের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।  তিনি মোট দুই শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেন। তার উল্লেখযোগ্য রচনা কালোভ্রমর, মৃত্যুবাণ, কালনাগ, উল্কা, উত্তরফাল্গুনী, হাসপাতাল, কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী, লালুভুলু, রাতের রজনীগন্ধা, কিরীটী অমনিবাস, অপারেশন ইত্যাদি। তিনি ১৯৮৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। 

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০