দার্শনিক অধ্যাপক বিমলকৃষ্ণ মতিলালের ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭৭ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচ্য ধর্ম ও নীতি সম্পর্কিত স্পালডিং অধ্যাপক ছিলেন। সনাতন ভারতীয় দর্শনের আলোচনায় তিনি একটি নতুনমাত্রা যোগ করেন। তিনি তার রচনাগুলো বুদ্ধিগম্য যুক্তিবিদ্যা পদ্ধতি দিয়ে উপস্থাপন করেন। ১৯৯০ সালে তিনি পদ্মভূষণ উপাধি লাভ করেন। বিমলকৃষ্ণ মতিলাল ১৯৩৫ সালের ১ জুন পশ্চিমবঙ্গ ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবকাল থেকেই তিনি গণিত এবং যুক্তির প্রতি আকৃষ্ট হন। তিনি সংস্কৃত কলেজের শীর্ষস্থানীয় পণ্ডিতদের দ্বারা ভারতীয় দার্শনিক ব্যবস্থায় শিক্ষাগ্রহণ করেন। শিক্ষা শেষে ১৯৫৭ সালে এ কলেজেই শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৬২ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। বিমলকৃষ্ণ মতিলাল ১৯৬২ সালে তিনি তর্কতীর্থ (যুক্তির গুরু) উপাধি (ডিগ্রি) লাভ করেন। তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ইন্ডোলজিস্ট ড্যানিয়েল ইনগালসের সংস্পর্শে এসেছিলেন। ড্যানিয়েল তাকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রামে যোগ দিতে উৎসাহিত করেন। তারই উৎসাহে তিনি ফুলব্রাইট ফেলোশিপ অর্জন করেন এবং ইনগালসের অধীনে নব্য ন্যায়ের অস্বীকৃতি মতবাদ নিয়ে পিএইচডি শেষ করেন। এ সময় তিনি উইলার্ড ভ্যান অরম্যান কুইনের সঙ্গেও পড়াশোনা করেন। পরবর্তীকালে তিনি টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতের অধ্যাপক এবং অক্সফোর্ডের স্পালডিং অধ্যাপক নির্বাচিত হন। তিনি তার রচনায় বুদ্ধিগম্য যুক্তিবিদ্যা পদ্ধতি দিয়ে উপস্থাপন করেছেন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্য ধর্ম ও নীতি সম্পর্কিত স্পালডিং অধ্যাপক ছিলেন। তিনি জার্নাল অব ইন্ডিয়ান ফিলসফির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদকও ছিলেন। মতিলাল তার রচনায় ভারতীয় যুক্তি উপস্থাপন করেন, বিশেষত ন্যায়-বৈসেসিকা, মীমাংসা এবং বৌদ্ধ দর্শনÑতিনি ভারতীয় দার্শনিক চিন্তাকে নিছক প্রকাশের চেয়ে সংশ্লেষণ হিসেবে বেশি উপস্থাপন করেন; যা শিক্ষার চেয়ে ধারণার উৎস হিসেবে ভারতীয় দার্শনিক ঐতিহ্যের প্রতি আগ্রহের উদ্দীপনা তৈরি করতে সহায়তা করেছিল। তার রচিত বইগুলোর মধ্যেÑএপিটেমোলজি, লজিক অ্যান্ড গ্রামার ইন ইন্ডিয়ান ফিলসফিক্যাল অ্যানালাইসিস, লজিক, ল্যাঙ্গুয়েজ, অ্যান্ড রিয়েলিটি: অ্যান ইনট্রোডাকশন টু ইন্ডিয়ান ফিলসফিক্যাল স্টাডিজ ইত্যাদি। তিনি ১৯৯১ সালের ৮ জুন মৃত্যুবরণ করেন।
কাজী সালমা সুলতানা