স্মরণীয়-বরণীয়

প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক ও সমাজসেবী সুখলতা রাওয়ের ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ছবি আঁকায়ও পারদর্শী ছিলেন। ইংরেজি ও বাংলায় তিনি বেশ কিছু শিশুতোষ বই রচনা করেছেন।

সুখলতা রাও ১৮৮৬ সালের ১০ অক্টোবর, কলকাতার ১৩ নং কর্নওয়ালিস স্ট্রিটের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম হাসি। বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ কন্যা তিনি। ভাই সুকুমার রায় বাংলা সাহিত্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিভা। ছোট বোন পুণ্যলতা চক্রবর্তীও সুসাহিত্যিক ছিলেন। তাদের আদিবাড়ি ছিল বর্তমান বাংলাদেশের ময়মনসিংহের মসুয়ায়। অস্কারবিজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায় ছিলেন তার ভ্রাতুষ্পুত্র।

শৈশবে পিতা উপেন্দ্রকিশোর তাকে ভর্তি করে দেন ব্রাহ্মবালিকা বিদ্যালয়ে। এখান থেকেই এন্ট্রান্স পাস করলেন তিনি। তারপর ভর্তি হলেন বিএ ক্লাসে বেথুন কলেজে। স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর সুখলতা কিছুদিন স্কুলে শিক্ষকতা করেন।

১৯০৭ সালে উড়িষ্যার ডাক্তার জয়ন্ত রাওয়ের সঙ্গে বিয়ে হলে তিনি স্বামীর সঙ্গে কটক চলে যান। সেখানে স্বামীর সহযোগিতায় তিনি সমাজসেবায় আত্মনিয়োগ করেন এবং কটকে ‘শিশু ও মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র’, ‘উড়িষ্যা নারী সেবা সংঘ’ প্রভৃতি সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সমাজসেবার পাশাপাশি তিনি সমাজসেবার পাশাপাশি তিনি বাংলা ও ইংরেজিতে ‘আলোক’ নামে একটি পত্রিকাও সম্পাদনা করেন। সুখলতা ইংরেজি ও বাংলায় ২০টির মতো গ্রন্থ রচনা করেন। তার শিশুতোষ গ্রন্থগুলো বিপুল প্রশংসা লাভ করে। তার রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যেÑ‘পথের আলো’, ‘লালিভুলির দেশে’, ‘খোকা এল বেড়িয়ে’, ‘গল্প আর গল্প’, ‘নানা দেশের রূপকথা’, ‘নিজে পড়’, ‘হিতোপদেশের গল্প’, ‘বেহুলা’, ‘সোনার ময়ূর’, ‘নতুন ছড়া’, ‘বিদেশী ছড়া’, ‘নানান দেশের রূপকথা’, ‘ঈশপের গল্প’, ‘ঘবি ঝঃবঢ়ং, খরারহম খরমযঃং,’ ‘খেলার পড়া’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

সুখলতা রাওয়ের গ্রন্থ ‘নিজে পড়’ শিশুসাহিত্য সংসদ কর্তৃক প্রকাশিত হয় এবং এর জন্য তিনি ‘লেখিকা’ পুরস্কার ও ভারত সরকারের ‘সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন। এছাড়া তার আরও কয়েকটি গ্রন্থ পুরস্কৃত হয়। সমাজসেবায় অবদান রাখার জন্য তিনি স্বামীর সঙ্গে যৌথভাবে ‘কাইজার-ই-হিন্দ’ পদক লাভ করেন। ১৯৬৯ সালের ৯ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০