Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 2:16 pm

স্মরণীয়-বরণীয়

বাংলাসাহিত্যের ভুবনজয়ী শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ। তিনি গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত। ১৯১৩ সালে তিনি গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে ১২৬৮ বঙ্গাব্দের পঁচিশে বৈশাখ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মাত্র আট বছর বয়সে লিখতে শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় তার ‘অভিলাষ’ কবিতা প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে ব্যারিস্টারি পড়ার উদ্দেশে তিনি ইংল্যান্ড যান। দেড় বছর ইংল্যান্ডে কাটিয়ে ১৮৮০ সালে কোনো ডিগ্রি না নিয়েই দেশে ফিরে আসেন। ১৮৯১ সাল থেকে বাবার আদেশে নদিয়া, পাবনা, রাজশাহী ও উড়িষ্যার জমিদারি তদারকি শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ। কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়ীতে তিনি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেন। ১৯০১ সালে তিনি সপরিবারে শিলাইদহ ছেড়ে চলে আসেন শান্তিনিকেতনে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মোট ১২টি উপন্যাস রচনা করেন। ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মননশীলতা দিয়ে বিশ্ব অঙ্গনে বিরল সম্মান অর্জন করেন তিনি। গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থটির জন্য ১৯১৩ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার লেখা ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়। সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও এক হাজার ৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত আছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। তার যাবতীয় পত্রসাহিত্য ১৯ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি গ্রন্থে প্রকাশিত। তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। তার রচিত ‘আমার সোনার বাংলা’ ও ‘জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে’ গান দুটি যথাক্রমে বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত।

১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে নাইট উপাধি প্রদান করে। ১৯১৯ সালে ১৩ এপ্রিল রাওলাট অ্যাক্টের বিরুদ্ধে পাঞ্জাবের জালিয়ান ওয়ালাবাগে এক মহাসমাবেশে ব্রিটিশ পুলিশের আকস্মিক গুলিতে অসংখ্য মানুষ নিহত হন। ইংরেজদের এই বর্বরোচিত ঘটনার প্রতিবাদে তিনি নাইট উপাধি ত্যাগ করেন। বিশ্বকবি ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠা করেন শ্রীনিকেতন। ১৯২৩ সালে শান্তিনিকেতনেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করেন বিশ্বভারতী বিদ্যালয়। ১৯৪১ সালের ২২ শ্রাবণ সেখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা