Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 1:30 am

স্মরণীয়-বরণীয়

কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, গবেষক ও ভাষাবিজ্ঞানী হুমায়ুন আজাদের ১৯তম মৃত্যুবাষিকী আজ। ২০০৪ সালের ১২ আগস্ট জার্মানির মিউনিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। হুমায়ুন আজাদ ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল তৎকালীন বিক্রমপুরের (বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ) কামারগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন। তার নাম ছিল হুমায়ুন কবির। ১৯৮৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি হুমায়ুন আজাদ নাম রাখেন। তিনি ১৯৬২ সালে রাড়িখাল স্যার জগদীশচন্দ্র বসু ইনস্টিটিউশন থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে অনার্সসহ স্নাতক ও ১৯৬৮ সালে স্নাতকোত্তর এবং ১৯৭৬ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। হুমায়ুন আজাদ ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রভাষক পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৮৬ সালে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। তিনি একজন প্রথাবিরোধী ও বহুমাত্রিক মননশীল লেখক। নবম শ্রেণিতে থাকাকালীন ‘ঘড়ি বলে টিক টিক’ শিরোনামে তিনি প্রথম প্রবন্ধ রচনা করেন, যা সেই সময়ের দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশ হয়। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৬০টিরও বেশি। এর মধ্যে ১০টি কাব্যগ্রন্থ, ১৩টি উপন্যাস, ২২টি সমালোচনা গ্রন্থ, আটটি কিশোরসাহিত্য ও সাতটি ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ক। তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে নারী, প্রবচনগুচ্ছ, আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল, সবকিছু ভেঙে পড়ে, সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে এবং পাক সার জমিন সাদ বাদ উল্লেখযোগ্য। ১৯৭৩ সালে তার প্রথম কাব্য অলৌকিক ইস্টিমার এবং প্রবন্ধগ্রন্থ রবীন্দ্রপ্রবন্ধ: রাষ্ট্র ও  সমাজচিন্তা প্রকাশ হয়। শিশু-কিশোরদের জন্য তিনি লিখেছেন লাল নীল দীপাবলি, ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, আব্বুকে মনে পড়ে, বুক পকেটে জোনাকি পোকা, আমাদের শহরে একদল দেবদূত প্রভৃতি। তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং একুশে পদক অর্জন করেন। ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত বইমেলা থেকে বাসায় যাওয়ার পথে তিনি ঘাতকদের আক্রমণের শিকার হন। ২০০৪ সালের আগস্টে তিনি ‘কবি হাইনরিশ হাইনের জীবনী ও তার কবিতার বাংলা অনুবাদ’ বিষয়ে গবেষণার জন্য জার্মানির ফেলোশিপ নিয়ে জার্মানিতে যান। সেখানে অবস্থানকালে ২০০৪ সালের ১২ আগস্ট তিনি আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা