স্মরণীয়-বরণীয়

ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিকন্যা বীণা দাসের ১১২তম জন্মবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯১১ সালের ২৪ আগস্ট নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন। তাদের আদি বাড়ি চট্টগ্রামের শেওড়াতলি গ্রামে। তাদের পরিবার ছিল রাজনৈতিক পরিবার।  কলকাতা বেথুন কলেজে পড়াশোনা করার সময় তিনি রাজনৈতিক সচেতন হয়ে ওঠেন। সে সময় বিপ্লবী সংগঠন যুগান্তর দলের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯২৭ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভারতের সংবিধান সংস্কার করার লক্ষ্যে সাইমন কমিশন গঠন করে। সেই কমিশনে কোনো ভারতীয় সদস্য না থাকায় বিক্ষুব্ধ হয় সব রাজনৈতিক সংগঠন। তারা এই কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ১৯২৮ সালে সাইমন কমিশনের সুপারিশের বিরুদ্ধে বীণা দাসও প্রতিবাদ করেন। সে সময় তিনি তার বোন ও আরও কিছু ছাত্রীদের নিয়ে গঠন করেন ছাত্রী সংঘ সংগঠন। ১৯৩২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান। প্রধান অতিথি বাংলার গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসন। গভর্নর যখন সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য শুরু করছেন তখন তাকে লক্ষ্য করে বীনাদাস গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে স্ট্যানলি জ্যাকসন মাটিতে পড়ে যান। অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। গভর্নর ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা তৎক্ষণাৎ দৌড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যায়। সে সময় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর পিতা কর্নেল হাসান সোহরাওয়ার্দী ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তিনি দ্রুত বীণা দাসের হাত থেকে রিভলবারটি কেড়ে নেন। গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসকে হত্যাচেষ্টার অপরাধে বীণা দাসের ৯ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।

সাত বছর জেলে কাটিয়ে ১৯৩৯ সালে গান্ধীজির প্রচেষ্টায় অন্যান্য রাজনৈতিক বন্দির সঙ্গে তিনি মুক্তি লাভ করেন। কারামুক্ত হওয়ার পর তিনি সাহিত্য জীবনে প্রবেশ করেন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কাজে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত তিনি দক্ষিণ কলকাতার কংগ্রেসের সম্পাদিকা ছিলেন। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য ছিলেন। নোয়াখালীর দাঙ্গার পরে সেখানে তিনি রিলিফের কাজ করেন।  বীণা দাস আজীবন  নিজেকে  সামাজিক ও রাজনৈতিক কাজে নিজেকে ব্যপ্ত রাখেন। ১৯৮৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০