স্কটিশ অজ্ঞেয়বাদী দার্শনিক ইতিহাসবিদ অর্থনীতিবিদ এবং প্রাবন্ধিক ডেভিড হিউমের ২৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি তার দার্শনিক অভিজ্ঞতাবাদ, সংশয়বাদ ও প্রকৃতিবাদের জন্য সুপরিচিত।
ডেভিড হিউম ১৭১১ সালের ৭ মে এডিনবরার লনমার্কেটে জন্মগ্রহণ করেন। ১২ বছর বয়সের আগেই তিনি ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরায় ভর্তি হন। প্রথমে তিনি পেশা হিসেবে আইনকে বেছে নেয়ার কথা ভাবেন। কিন্তু পরে দর্শন ও সাধারণ শিক্ষার প্রতি ঝুঁকে পড়েন। তিনি একাধারে দীর্ঘ ১০ বছর শুধু দর্শন পড়ালেখায় নিজেকে নিযুক্ত রাখেন। ১৭৩৪ সালে ডেভিড হিউম কলেজ অব লা ফ্লিচে নামের জেস্যুইট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেশকিছু বক্তৃতা দেন। সেখানে চার বছরে লিখেন বিখ্যাত ‘আ ট্রিটিজ অব হিউম্যান নেচার’ (১৭৩৯)। ২৬ বছর বয়সে তার সবচেয়ে বিখ্যাত এ বইটি লেখা সমাপ্ত করেন। হিউমের দর্শনচর্চার ক্ষেত্র ছিলÑজ্ঞানতত্ত্ব, অধিবিদ্যা, ফিলোসফি অব মাইন্ড, নীতিবিদ্যা, রাষ্ট্রদর্শন, নন্দনতত্ত্ব, ধর্মদর্শন ও ধ্রুপদী অর্থনীতি। মানব প্রকৃতি, নৈতিক নীতি, মানুষের ভাবনা ও ধর্ম নিয়েও গবেষণা করেন তিনি। ‘আ ট্রিটিজ অব হিউম্যান নেচার’ বইয়ে তিনি মানববিজ্ঞান বা সায়েন্স অব ম্যানের প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা তৈরি করেন। তিনি বুদ্ধিবাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে মানুষের কামনা-বাসনাকে গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, মানুষ সরাসরি অভিজ্ঞতার মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করে। তার মতে বস্তুর সঠিক জ্ঞান বলতেও কিছু নেই। সঠিকজ্ঞান কেবল অঙ্কশাস্ত্রেই সম্ভব। কারণ, অঙ্ক সংখ্যা নিয়ে, সূত্র নিয়ে কাজ করে। জ্ঞানের মূল কাজ বস্তুর অস্তিত্ব নির্ণয় করা নয়। জ্ঞানের কাজ হচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাপনের সহায়ক মাধ্যম হওয়া। হিউম দেখাতে চেয়েছেন, মানুষের পক্ষে বস্তুর জ্ঞান লাভ করা সম্ভব নয়। হিউম প্রায় ১৫ বছর সময় নিয়ে তার ‘দ্য হিস্ট্রি অব ইংল্যান্ড’ বইটি রচনা করেন। বইটিতে তিনি জুলিয়াস সিজার থেকে ১৬৮৮ সালের বিপ্লব পর্যন্ত ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেন। তার রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ-অ্যা ট্রিটিজ অব হিউম্যান নেচার’ (১৭৩৯) ‘অ্যা কাইন্ড অব হিস্ট্রি অব মাই লাইফ’ (১৭৩৪), ‘অ্যান এনকুয়ারি কনসার্নিং দ্য প্রিন্সিপলস অব মোরালস’ (১৭৫১), ‘পলিটিক্যাল ডিসকোর্সেস’ (১৭৫২) ‘ফোর ডিসারটেশনস’ (১৭৫৭) ও ‘দ্য নেচারাল হিস্ট্রি অব রিলিজিয়ন’ (১৭৫৭) ইত্যাদি। ডেভিড হিউম ১৭৭৬ সালের ২৫ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।
কাজী সালমা সুলতানা
