স্মরণীয়-বরণীয়

প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ১৩০তম জন্মদিন আজ। তিনি ১৮৯২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাদের পরিবারের সদস্যরা উর্দু ভাষায় কথা বলতেন। কিন্তু তিনি নিজ চেষ্টায় বাংলা ভাষা শেখেন এবং বাংলার চর্চা করেন। কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় তার শিক্ষাজীবন শুরু। পরে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে থেকে বিজ্ঞান বিষয়ে তিনি স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। মায়ের অনুরোধে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি ভাষা এবং সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি (সম্মান) ও বিসিএল ডিগ্রি ও লন্ডনের গ্রেইজ ইন থেকে ব্যারিস্টার এট ল সম্পন্ন করে, ব্রিটেনে আইনজীবী হিসেবে কিছুদিন কাজ করেন। ১৯২০ সালে তিনি ভারতে ফিরে আসেন এবং পরের বছর বাংলা প্রাদেশিক সভায় সদস্য নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে প্রথমে তিনি যোগ দেন চিত্তরঞ্জন দাশের স্বরাজ পার্টিতে। দক্ষ শ্রমিকনেতা হিসেবে তিনি কলকাতায় নাবিক, রেলকর্মচারী, পাটকল ও সুতাকল কর্মচারী, রিকশাচালক, গাড়িচালক প্রভৃতি মেহনতি মানুষের প্রায় ৩৬টি ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন গড়ে তোলেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থেকেছেন। ১৯২৪ সালে তিনি কলকাতা করপোরেশনের ডেপুটি মেয়র, ১৯৩৭ সালে ফজলুল হক কোয়ালিশন মন্ত্রিসভার শ্রম ও বাণিজ্যমন্ত্রী, ১৯৪৩-১৯৪৫ সালে খাজা নাজিমউদ্দীন মন্ত্রিসভায় বেসামরিক সরবরাহ মন্ত্রী, ১৯৪৬-১৯৪৭ সালে অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, পাকিস্তান আমলে ১৯৫৪-১৯৫৫ সালে মোহাম্মদ আলীর মন্ত্রিসভায় আইনমন্ত্রী এবং ১৯৫৬-১৯৫৭ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯২০ সালে তিনি কলকাতা খেলাফত কমিটির সাধারণ সম্পাদক, ১৯৩৭ সালে ইউনাইটেড মুসলিম পার্টি গঠন করে নিজে দলের সম্পাদক হন। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সর্বভারতীয় মুসলিম লীগ পুনরুজ্জীবিতের উদ্যোগ নিলে সোহরাওয়ার্দী নিজ দলসহ মুসলিম লীগে যোগদান করেন।

১৯৪৬ সালের নির্বাচনে বাংলায় মুসলিম লীগের বিজয়ে তিনিই মূলশক্তি ছিলেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানে না গিয়ে কলকাতায় ও গান্ধীর দাঙ্গাবিরোধী শান্তি মিশনে নিজেকে নিয়োজিত করেন। তিনি পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে সমতার নীতি এবং পশ্চিম পাকিস্তান এক ইউনিট গঠনের একান্ত সমর্থক ছিলেন।

 ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠায় সোহরাওয়ার্দী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি যুক্তফ্রন্ট গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৩ সালের ৫ ডিসেম্বর লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অবস্থানকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০