Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 2:59 am

স্মরণীয়-বরণীয়

গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠাতা, মার্কসবাদী তাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক নেতা মাও সে তুং-য়ের আজ ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠাতা ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ১৯৪৯ সালে তার নেতৃত্বেই চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় আসে। শাসন ক্ষমতায় এসে মাও দেশটিকে ‘পিপলস রিপাবলিক অব চায়না’ বলে ঘোষণা করেন। সমাজতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তিনি চীন শাসন করেন। মার্কসবাদ-লেনিনবাদে তার তাত্ত্বিক অবদান, সমর কৌশল এবং তার কমিউনিজমের নীতি একত্রে মাওবাদ নামে পরিচিত। তিনি চীনের শিল্পকারখানা রাষ্ট্রীয় মালিকানায় আনেন। তিনি সারাবিশ্বের অসংখ্য বিপ্লবীর অনুপ্রেরণা। মাও সে তুং চীনের হুনান প্রদেশের শাং তান জেলার শাউ শাং চুং গ্রামে ১৮৯৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। আট বছর বয়সে তিনি তার গ্রামের স্কুলে ভর্তি হন। ১৩ বছর বয়সে আর্থিকভাবে পরিবারকে সাহায্য করার জন্য স্কুলে পড়াশোনা করা ছেড়ে দেন। শুরু করেন কৃষিকাজ। পরে মাও হুনান প্রদেশের রাজধানী চাংশায় চলে যান পুনরায় তার শিক্ষা জীবন শুরু করার জন্য। এ সময় চীনে কিং রাজবংশবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। তিনি ১৯১১ ও ১৯১২ সালের ছয় মাস এ আন্দোলনের সেনা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯১৩-১৮ সাল পর্যন্ত তিনি টিচার্স ট্রেনিং স্কুলে পড়াশোনা করেন। এ সময়ে তিনি বিপ্লবী আন্দোলন সম্পর্কে আরও জ্ঞানলাভ পারেন। ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লব তাকে অনুপ্রেরণা জাগায়। মাও সে তুং স্নাতক সম্পন্ন করে চীনের বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সহকারী হিসেবে কাজ করা শুরু করেন। এ সময় তিনি মার্কসবাদ নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন ও  বামপন্থি রাজনৈতিক ধ্যানধারণার প্রতি আকৃষ্ট হন। ১৯২০ সালের দিকে তিনি একজন মার্কসবাদী হিসেবে চীনা রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিতি লাভ  করেন।  ১৯২৫ সালে নিজগ্রাম শাওশানে কৃষক সংগঠন গড়ে তোলেন মাও। ১৯২৭ সালে হুনান বিদ্রোহ থেকে চীনের সশস্ত্র সংগ্রামের শুরু। ১৯৪৭ সালের মধ্যে চিয়াং কাই শেকের নেতৃত্বাধীন চীনের জাতীয়তাবাদী সরকারের বিরুদ্ধে সার্বিক সংগ্রামের প্রস্তুত নিতে শুরু করে কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না। ১৯৪৯ সালে মাও সে তুং চীনের শাসন ব্যবস্থায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন।  তিনি অনুন্নত ও দারিদ্রপীড়িত চীনকে সমাজতন্ত্রের আদশে নতুনভাবে নির্মাণ করতে শুরু করেন। চীনের সর্বজনীন আধুনিকায়ন, দ্রুতগতিতে শিল্পায়ন এবং গণশিক্ষার ব্যাপক অগ্রগতিতে তিনি বিশাল অবদান রাখেন। চিনের এই অবিসংবাদিত মহান নেতা ১৯৭৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা