স্মরণীয়-বরণীয়

খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তার রচিত উপন্যাসের সংখ্যা ৬৫টি। তিনি তার রচনায় মানবচরিত্রের নানা জটিলতা ও নিগূঢ় রহস্য জীবন্তভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তারাশঙ্কর ১৯৯৮ সালের ২৩ জুলাই পশ্চিম বাংলার বীরভূম জেলার লাভপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯১৬ সালে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। পরে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ও পরে সাউথ সাবআর্বান কলেজে (অধুনা আশুতোষ কলেজ) পড়াশোনা করেন।

১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ব্রিটিশবিরোধী অসহযোগ আন্দোলনে তিনি যোগ দেন। ব্রিটিশ শাসন বিরোধিতা ও ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকার কারণে তিনি ১৯৩০ সালে গ্রেপ্তার হন। কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি নিজেকে সাহিত্য রচনায় নিয়োজিত করেন। ১৯৫২ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য মনোনীত হন। ১৯৬০ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং সংসদের সদস্য মনোনীত হন। ১৯৩২ সালে তারাশঙ্কর প্রথমবার শান্তিনিকেতনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে দেখা করেন। একই বছরে তার প্রথম উপন্যাস ‘চৈতালী ঘূর্ণি’ প্রকাশ পায়। তার প্রথম গল্প ‘রসকলি’ পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত পত্রিকা কল্লোল-এ প্রকাশিত হয়। তিনি প্রায় ২০০টি গ্রন্থ রচনা করেন। তার মধ্যে ৬৫টি উপন্যাস, ৫৩টি গল্প, ১২টি নাটক, চারটি প্রবন্ধ, চারটি আত্মজীবনী এবং দুটি ভ্রমণকাহিনি।

তার উপন্যাসে প্রাধান্য পেয়েছে মাটি ও মানুষ, বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের জীবনচিত্র, স্বাধীনতা আন্দোলন, যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, অর্থনৈতিক বৈষম্য, ব্যক্তির মহিমা ও বিদ্রোহ, সামন্ততন্ত্র-ধনতন্ত্রের দ্বন্দ্ব ইত্যাদি।

তারাশঙ্করের রচনাবলির মধ্যে উপন্যাসÑচৈতালী ঘূর্ণি, জলসাঘর, ধাত্রীদেবতা, কালিন্দী, গণদেবতা, পঞ্চগ্রাম, কবি, হাঁসুলি বাঁকের উপকথা, আরোগ্য নিকেতন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

তিনি অনেক গল্পও লিখেছেন। 

তারাশঙ্করের গল্পের সংকলন তিন খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’, ‘সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার’, ‘পদ্মশ্রী’ ও ‘পদ্মভূষণ’ ছাড়াও নানা উপাধি ও পদক লাভ করেন। তার উপন্যাস, গল্প ও নাটক নিয়ে ৪০টিরও বেশি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। তার সৃষ্টিশীল জীবনের সমাপ্তি ঘটে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০