স্মরণীয়-বরণীয়

শহীদ ডা. ফজলে রাব্বীর ৯১তম জন্মবার্ষিকী আজ। তিনি ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ডা. ফজলে রাব্বী ১৯৩২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পাবনার হেমায়েতপুরের ছাতিয়ানী গ্রামে জš§গ্রহণ করেন। মেধাবী রাব্বী পাবনা জিলা স্কুল থেকে ১৯৪৮ সালে তিনি ম্যাট্রিক, এরপর ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট ও  ১৯৫৫ সালে এমবিবিএস পাস করেন। শিক্ষাজীবনে সব পরীক্ষায় তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। এমবিবিএস চূড়ান্ত পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান অধিকার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্বর্ণপদক’ লাভ করেন। ১৯৬০ সালে ডা. রাব্বী যুক্তরাজ্যের এডিনবরা থেকে এমআরসিপি ডিগ্রি লাভ করেন। তিন বছর পর দেশে ফিরে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৮ সালে তিনি একইসঙ্গে মেডিসিন ও হƒদরোগ বিভাগের অধ্যাপক হন। অধ্যাপনা ও চিকিৎসা পেশার পাশাপাশি গবেষণার কাজও করতেন। তার গবেষণামূলক প্রবন্ধ ‘ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল’ ও ‘ল্যানসেট’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। ডা. রাব্বী ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত হন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে কর্মরত ছিলেন। সে সময় তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খুব গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রয়োজনীয় অর্থ সরবরাহ, আহতদের ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা দিতেন। যিনি মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্নভাবে মনোবল বাড়িয়ে, আশ্রয় দিয়ে এবং সংগঠিত করতেন। অসহযোগ আন্দোলনের সময় ডা. রাব্বী সহকর্মীদের নিয়ে রাজপথে নেমে এসেছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার একদিন আগে, ১৫ ডিসেম্বর বিকালে পাকিস্তানি বাহিনীর কয়েকজন সেনাসহ রাজাকার-আলবদররা ডা. ফজলে রাব্বীকে  ধরে নিয়ে যায় ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে নির্মমভাবে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের দু’দিন পর ১৮ ডিসেম্বর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে অজস্র  মরদেহের ভিড়ে পাওয়া যায় তার মরদেহ। বাম দিকে গালের হাড়ে এবং কপালের বাম পাশে বুলেটের চিহ্ন। সারা বুকে অজস  বুলেটের চিহ্ন। দুই চোখ উপড়ানো। তার সমগ্র শরীর জুড়ে ছিল বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে আঘাতের চিহ্ন, হƒৎপিণ্ড আর কলিজা ছিঁড়ে ফেলেছে আলবদর ও হানাদাররা। ১৯৭২ সালে শহিদ অধ্যাপক ডা. ফজলে রাব্বীর নামে ঢাকা মেডিকেল কলেজের একটি হলের নামকরণ করা হয় শহিদ ডা. ফজলে রাব্বী হল।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০