Print Date & Time : 16 June 2025 Monday 9:16 pm

স্মরণীয়-বরণীয়

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী ও প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর আজ ১৫৪তম জন্মবার্ষিকী। বিশ্ববাসীর কাছে তিনি মহাত্মা গান্ধী, বাপু বা বাবা নামে পরিচিত। তিনি ভারতের জাতির জনক। মহাত্মা গান্ধী ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের লক্ষ্যে গঠিত সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ১৮৬৯ সালের ২ অক্টোবর পোরবন্দরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৮৮ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি ব্যারিস্টারি শিক্ষা গ্রহণের জন্য ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে যান। সেখানে তিনি ব্যারিস্টারি পড়ার পাশাপাশি হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, ইসলামসহ অন্যান্য ধর্ম এবং বিভিন্ন রীতি সম্পর্কে পড়াশোনা করেন। ব্যারিস্টারি পাস করে গান্ধী আইন ব্যবসা করতে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। তিনি সেখানে ভারতীয় কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে বৈষম্যের শিকার হন। এ সময় দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার একটি ঘোষণায় ভারতীয়দের ভোটাধিকার থেকে দূরে রাখতে হুকুম জারি করে। এই অবিচারের বিরুদ্ধে গান্ধী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ১৯১৫ সালের ৯ জানুয়ারি তিনি ভারতে ফিরে আসেন। ১৯২১ সালে গান্ধী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নির্বাহী দায়িত্ব পান। পরবর্তীকালে তিনি কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৪২ সালে ইংরেজ শাসকদের প্রতি সরাসরি ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটান। ১৯২১ সালের ডিসেম্বরে মহাত্মা গান্ধী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নির্বাহী হন। তার নেতৃত্বে কংগ্রেস স্বরাজের লক্ষ্যকে সামনে রেখে নতুন সংবিধান গ্রহণ করে। ১৯৪০ সালে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হলেন। এই অধিবেশনে ঘোষণা করা হলো পূর্ণ স্বাধীনতা ভারতবাসীর কাম্য। গান্ধীকে আবার নেতা হিসেবে নির্বাচন করা হয়। শুরু হয় সত্যাগ্রহ আন্দোলন। মহাত্মা গান্ধী ১৯৩০ সালে লবণ করের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ডান্ডি লবণ কুচকাওয়াজে নেতৃত্ব দেন। এর মাধ্যমে ইংরেজদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণের আন্দোলন ঘোষিত হয়। এ আন্দোলন প্রতিষ্ঠা হয়েছিল অহিংস মতবাদ বা দর্শনের ওপর। পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগে সাধারণ মানুষের ওপরে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন, যা শেষ পর্যন্ত স্বরাজ আন্দোলনে রূপ নেয়। ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি হিন্দু মৌলবাদী নাথুরাম গডসের গুলিতে তিনি নিহত হন। জাতিসংঘ অহিংস আন্দোলনের বিশ্ব স্বীকৃতিস্বরূপ গান্ধীর জন্মদিন ২ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।