Print Date & Time : 16 June 2025 Monday 9:16 pm

স্মরণীয়-বরণীয়

উপমহাদেশের অন্যতম উচ্চাঙ্গ সংগীতশিল্পী, সুরকার ও সরোদবাদক ওস্তাদ বাহাদুর হোসেন খানের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৩১ সালের ১৯ জানুয়ারি ব্রাক্ষণবাড়িয়ার শিবপুর গ্রামের এক প্রখ্যাত সংগীত পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সংগীতজ্ঞ আয়েত আলী খাঁ ও চাচা আলাউদ্দিন খাঁ। বাল্যকাল থেকে পারিবারিক পরিবেশেই তার সাহিত্যচর্চার শুরু হয়। বাবার কাছে প্রথমে তিনি সরোদ শেখেন, সেই সঙ্গে গানের অনুশীলনও করেন। গান গেয়ে তিনি বহুবার স্বর্ণপদক লাভ করেন। পরে সংগীতে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে তিনি মাইহারে যান, সেখানে পিতৃব্য আলাউদ্দিন খাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে দীর্ঘ ২০ বছর নিরলস সাধনার পর সরোদে দক্ষতা অর্জন করেন।

বাহাদুর হোসেন খান ১৯৪৯ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান রেডিওশিল্পী হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫১ সালে তিনি বম্বে চলে যান। সেখানে তিনি নৃত্যশিল্পী শান্তি বর্মণের ‘লিটল ব্যালে ট্রুপের সংগীত পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ওস্তাদ বাহাদুর হোসেন খান বিভিন্ন সময়ে চীন, রাশিয়া, ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যে সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পরিচিত করে তোলেন। তিনি বেশ কয়েক বছর কলকাতা ও ক্যালিফোর্নিয়ায় আলী আকবর কলেজ অব মিউজিকে শাস্ত্রীয় সংগীত বিষয়ে অধ্যাপনা করেন।

ওস্তাদ বাহাদুর হোসেন খানের কয়েকটি লংপ্লেসহ অন্যান্য রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছে। তিনি কয়েকটি ছায়াছবির সংগীত পরিচালনাও করেন। ১৯৬৫ সালে ঋত্বিক ঘটকের ‘সুবর্ণ রেখা’ ছায়াছবিতে সংগীত পরিচালনা শুরু করেন তিনি। এই ছবির সংগীত পরিচালনার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালকের সম্মান লাভ করেন। পরে আরও একটি চলচ্চিত্র ‘নতুন পাতা’র সংগীত পরিচালনার জন্য তিনি বিশেষ সম্মানে ভূষিত হন। বাহাদুর হোসেন খানের কয়েকটি লংপ্লেসহ অন্যান্য রেকর্ড বের হয়েছে। যেসব ছায়াছবির সংগীত পরিচালনা করেছেন তিনি সেগুলো হলোÑমেঘে ঢাকা তারা, ত্রিসন্ধ্যায়, যেখানে দাঁড়িয়ে, শ্বেত ময়ূর ও তিতাস একটি নদীর নাম। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিশিষ্ট সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ও চিত্রশিল্পী যামিনী রায়ের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রের আবহ সংগীত পরিচালনা করেন তিনি। ১৯৮৯ সালের ৩ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।