আজ এ সম্পাদকীয়টি যখন পড়ছেন, তখন একই দিনে বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল মুহূর্তেরও সাক্ষী হয়ে থাকছেন আপনি। শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল খেলছে শততম টেস্ট। জাতির জন্য এটি আনন্দ ও গৌরবের মুহূর্ত। শেয়ার বিজের পক্ষ থেকে আমরা বাংলাদেশ
ক্রিকেট টিমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। দেশের ক্রিকেটকে এতদূর এগিয়ে নিয়ে আসার জন্য বিগত
বছরগুলোয় যারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রেখেছেন, তাদেরও জানাই শুভেচ্ছা। বাংলাদেশের ক্রিকেটের অন্যতম পরীক্ষিত বন্ধু শ্রীলঙ্কা। টেস্টখেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে এ দেশটির সঙ্গেই বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেÑএ ম্যাচসহ ১৮টি। ধন্যবাদ শ্রীলঙ্কাকেও।
আইসিসি’র নিয়মের বেড়াজালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল টেস্ট খেলার সুযোগ পায় খুব কমই। ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকে ১৬ বছরে মাত্র ১০০টি টেস্ট। খুব বেশি নয়, বছরে গড়ে ৬টির কিছু বেশি। টেস্ট ক্রিকেটে এ সময়টুকুতে বাংলাদেশ বড় কিছু করতে পেরেছে তা নয়; কিন্তু নিজেদের সামর্থ্যরে জানান দিয়েছে ভালোভাবে। ওয়ানডের তুলনায় টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ ম্রিয়মাণ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দলের পারফরম্যান্স বলছে ক্রিকেটাররা সর্বস্ব উজাড় করে দিলে শততম টেস্ট থেকে জয় তুলে আনা বাংলাদেশের জন্য কঠিন হবে না। শ্রীলঙ্কার বর্তমান টিমে দু’একজন ছাড়া আর কেউ তেমন অভিজ্ঞ নন। তবে তাদের তৃণমূল ক্রিকেট যথেষ্ট শক্তিশালী। সুতরাং তাদের ভিতও শক্ত। অভিজ্ঞতা না থাকলেও প্রথম টেস্টে শ্রীলঙ্কা যেভাবে খেলেছে, তাতে অভিজ্ঞতার বিচারে ফেবারিট না বলা গেলেও শক্তিমত্তার দিক দিয়ে কোনোভাবেই বাংলাদেশের পেছনে তাদের রাখা যাবে না। আর সে কারণেই ক্রিকেটারদের আত্মনিবেদন আরও বেশি জরুরি।
টেস্ট ম্যাচ শুধু যে স্কিল প্রদর্শনীর ক্ষেত্র তা নয়; এতে জড়িত আছে শারীরিক সামর্থ্য, টেকনিক ও বিশেষত ধৈর্য। এ শেষ বিষয়টিতেই আমাদের ক্রিকেটাররা সবচেয়ে পিছিয়ে। প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে তাড়াহুড়োর প্রবণতা দেখা গেছে বেশি। তামিম, সৌম্য, লিটন বা সাকিবরা উইকেট উপহারই দিয়ে এসেছেন। তাদের কারোরই টেকনিকে ঘাটতি আছে বলে মনে হয় না; কিন্তু উইকেটে থিতু হতে পারছেন না, বার বার অধৈর্য হয়ে পড়ছেন। নির্বিষ বলে আউট হচ্ছেন হাস্যকর ভুল করে। অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের দায়িত্ব নিয়ে খেলার কথা। বাংলাদেশের ক্রিকেট টিমে দেখা যাচ্ছে উল্টোটা। শততম টেস্টে আমরা চাইবোÑসবাই নিজ জায়গা থেকে দক্ষতার প্রমাণ দেখিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনবেন। টেস্টটি বাংলাদেশের মাটিতে হলে
খেলোয়াড়রা হোম গ্রাউন্ডের বাড়তি সুবিধা পেতেন সত্যি; কিন্তু বিদেশের মাটিতে জিততে পারলে তা যে বাড়তি কৃতিত্ব জোগাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আজ থেকে পাঁচদিন ধরে খেলা চলবে। জয়ে ও পারফরম্যান্সে স্মরণীয় হয়ে থাকুক বাংলাদেশ ক্রিকেটের শততম টেস্ট ম্যাচ।
Add Comment