চিত্রনায়ক মান্নার আসল নাম এসএম আসলাম তালুকদার। তবে চিত্রজগতে তিনি মান্না নামেই পরিচিত। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্রও প্রযোজনা করেছেন। তাছাড়া মান্না ভালো সংগঠকও ছিলেন। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
মান্না দুই শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ২০০৬ সালে সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৬৪ সালের ৬ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায় মান্না জš§গ্রহণ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাস করার পর ১৯৮৪ সালে তিনি ‘নতুন মুখের সন্ধানে’র মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আসেন। এরপর থেকে একের পর এক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং চলচ্চিত্র অঙ্গনে তার শক্ত ভিত্তি গড়ে তোলেন।
নব্বই দশকে অশ্লীল চলচ্চিত্র নির্মাণের ধারা শুরু হলে যে কজন প্রথমেই এর প্রতিবাদ করেছিলেন, তাদের মধ্যে নায়ক মান্না অন্যতম। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র ‘দাঙ্গা’, ‘লুটতরাজ’, ‘তেজী’, ‘আম্মাজান’ ও ‘আব্বাজান’। এর মধ্যে আম্মাজান চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের সর্বাধিক ব্যবসাসফল ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম।
তার প্রথম অভিনীত ছবির নাম ‘তওবা’। তবে প্রথম মুক্তি পায় ‘পাগলী’ ছবিটি। ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাসেম মালার প্রেম’ ছবিতে প্রথম একক নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন তিনি। এর আগপর্যন্ত সব ছবিতে মান্না দ্বিতীয় নায়ক হিসেবে অভিনয় করেছেন। ‘কাসেম মালার প্রেম’ ছবিটি দর্শকের মাঝে সাড়া ফেলার পর মান্না একের পর এক ছবিতে একক নায়ক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান। এরপর কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ ছবির কারণে তার একক নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া আরও সহজ হয়ে যায়। এরপর মোস্তফা আনোয়ারের ‘অন্ধ প্রেম’, মনতাজুর রহমান আকবরের ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, কাজী হায়াতের ‘দেশদ্রোহী’, আকবরের ‘বাবার আদেশ’ ছবিগুলো মান্নার অবস্থান সুপ্রতিষ্ঠিত করে।
মান্না প্রযোজিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র ‘লুটতরাজ’, ‘লাল বাদশা’, ‘আব্বাজান’, ‘স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘মনের সাথে যুদ্ধ’, ‘মান্না ভাই’ ও ‘পিতা মাতার আমানত’।
মান্না ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচি
মান্নার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। মান্না ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আজ বাদ আসর মান্নার উত্তরার বাসায় এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া একই দিন জুমার নামাজের পর বিএফডিসির মসজিদে বিশেষ মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
মান্না ফাউন্ডেশন সূত্রে আরও জানা যায়, স্মরণসভায় চলচ্চিত্রাঙ্গনের শিল্পী, প্রযোজক, পরিচালক ও কলাকুশলীরা বক্তব্য রাখবেন।