Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 11:51 pm

স্মরণ: মীনা কুমারী

 

মীনা কুমারীর জন্ম ১৯৩২ সালের ১ আগস্ট। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে মাত্র সাত বছর বয়সে অভিনয় জগতে আসতে বাধ্য হন তিনি। পরে বয়ঃসন্ধিতে নায়িকার ভূমিকায় দেখা যায় তাকে। রূপ ও অভিনয় প্রতিভায় দ্রুত খ্যাতি পান তিনি। ‘বীর ঘটোৎকোচ’ (১৯৪৯), ‘শ্রী গণেশ মহিমা’ (১৯৫০) ও ‘আলাদিন অ্যান্ড দ্য ওয়ান্ডারফুল ল্যাম্প’-এর (১৯৫২) মতো চলচ্চিত্রের মাধ্যমে জনপ্রিয়তার সূচনা হয়। ১৯৫২ সালে মুক্তি পায় মীনা অভিনীত ‘বৈজু বাওরা’। এটি হিন্দি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ধ্রুপদী সিনেমাগুলোর একটি। ১৯৫২ সালে তার সঙ্গে খ্যাতনামা পরিচালক কামাল আমরোহির পরিচয় হয়। কামালের প্রেমে পড়ে তাকে বিয়ে করেন। এ সময় তার অভিনীত ছবিগুলো দারুণ ব্যবসায়িক সাফল্য পায়। ‘পরিণীতা’তে (১৯৫৩) তার অভিনয় ছিল অসাধারণ। ‘দায়রা’, ‘একহি রাস্তা’, ‘সারদা’, ‘দিল আপনা অউর প্রীত পারায়া’, ‘আজাদ’, ‘কোহিনূর’সহ অনেক হিট ছবি উপহার দেন তিনি। ১৯৬২ সালে ‘সাহেব বিবি আউর গোলাম’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। এ ছবিতে জমিদারবাড়ির কুলবধূর চরিত্রে অনন্য অভিনয় করেন তিনি। সে বছর ‘আরতি’ সিনেমাতেও অসাধারণ অভিনয় করেন মীনা। মীনা কুমারী চারবার সেরা অভিনেত্রীর ফিল্মফেয়ার পুরস্কার ও আটবার মনোনয়ন পান। ১৯৫৬ সালে শুরু করা ‘পাকিজা’ কামাল আমরোহির সেরা কাজ বলে মনে করা হয়। কিন্তু ৬৪ সালে মীনা-আমরোহির দাম্পত্যে চিড় ধরে। তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। সে কারণে ‘পাকিজা’ অসমাপ্ত রয়ে যায়। এ সময় মীনা হতাশায় মদ্যপানে আসক্ত হয়ে পড়েন। তখন তার সঙ্গে পরিচয় ঘটে ধর্মেন্দ্রর। তারা জুটি বেঁধে ‘পূর্ণিমা’, ‘কাজল’, ‘ফুল আউর পাথ্থর’, ‘চন্দন কা পালনা’সহ কয়েকটি সফল সিনেমা করেন। তারপর নানা কারণে ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে মীনার দূরত্ব তৈরি হয়। এরপর মীনা আরও বেশি মদে ডুবে যান । লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী হন। এ সময় ‘পাকিজা’ শেষ করার প্রস্তাব নিয়ে মীনার সঙ্গে দেখা করেন কামাল। কামালের কথায় রাজি হন মীনা। চরম অসুস্থ শরীর নিয়েও তিনি ‘পাকিজা’র কাজ করেন। ছবিটি বলিউডের শতবর্ষের অন্যতম সেরা নির্মাণ হিসেবে বিবেচিত হয়। ‘পাকিজা’ মুক্তি পায় ১৯৭২ সালে। মীনা কুমারী তখন মৃত্যুশয্যায়। হাসপাতালে মীনাকে কবি, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও বন্ধু গুলজার ছাড়া আর কেউ দেখতে আসেননি।

১৯৭২ সালের ৩১ মার্চ মীনা কুমারী মারা যান।