নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ভবিষ্যৎ তরুণ প্রজন্মকে ই-সিগারেটের মতো মরণনেশায় আসক্তকরণে তামাক কোম্পানি কৌশলে ই-সিগারেটের প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। এক্ষেত্রে সাধারণ সিগারেটের বিকল্প হিসেবে ই-সিগারেটের বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়া সরকারের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সম্প্রতি তামাক কোম্পানিগুলোর যুব সমাজ ধ্বংসে ই-সিগারেট প্রসারের পাঁয়তারায় বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট উদ্বিগ্ন। বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করে গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট, বিএনটিটিপি, প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠন, এইড ফাউন্ডেশন, ইপসা, দিশারী মহিলা
কল্যাণ সমিতি, নাটাব, টিসিআরসি, ডাস, আইডিএফ, কেএইচআরডিএস ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘যুব সমাজ ধ্বংসে, ই-সিগারেট প্রসারের পাঁয়তারা চলছে’ শীর্ষক একটি অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা শামীমা সুলতানার সভাপতিত্বে ওই অবস্থান কর্মসূচিটি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞরা সরাসরি উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে সৈয়দা শামীমা সুলতানা বলেন, সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগের ফলে তামাক কোম্পানির ব্যবসা অনেক ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এমতাবস্থায় কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ই-সিগারেট/ভেপিং-কে ধূমপান ত্যাগে সিগারেটের বিকল্প এবং কম ক্ষতিকর পণ্য হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যেখানে তামাক নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক সেখানে ই-সিগারেটের মতো একটি ক্ষতিকর পণ্য আমদানির অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্ত যে নিতান্তই কোম্পানির কূটকৌশলের অংশ তা একদম স্পষ্ট।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে এ ক্ষতিকর ভেপিং/ই-সিগারেটের ব্যবহার খুবই নগণ্য। কিন্তু সিগারেট কোম্পানিগুলো ধূমপান ত্যাগের কথা বলে, কিছু ব্যক্তির সহযোগিতায় এ দ্রব্য সেবনে তরুণদের পাশাপাশি অধূমপায়ীদেরও উৎসাহী করছে। এমনকি দেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি কোম্পানি ঢাকার বিভিন্ন স্থানে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ভেপিং এবং ই-সিগারেটে তরুণদের উৎসাহী করতে মেলা আয়োজনের পাশাপাশি চেইন শপ চালু করেছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত বক্তারা আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, দেশে নতুন কোনো সিগারেট কোম্পানিকে অনুমোদন না দেয়া এবং সিগারেট ও তামাকজাতীয় দ্রব্যের ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব। কর্মসূচি থেকে বক্তারা, এ পণ্যের ব্যবহারকারীর সংখ্যা যেহেতু বর্তমানে খুবই কম উল্লেখ করে এখনই এ ক্ষতিকর পণ্য নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়তার জোর দাবি জানান।