Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 3:30 pm

হংকং পুঁজিবাজারে চাবাইদাওয়ের শেয়ার সূচকের পতন

শেয়ার বিজ ডেস্ক: চাবাইদাও নামে পরিচিত চীনের জনপ্রিয় বাবল টি চেইন সিচুয়ান বাইচা বাইদাওয়ের শেয়ারের দাম ব্যবসার প্রথম দিনেই হংকং স্টক এক্সচেঞ্জে ৪০ শতাংশের বেশি কমেছে। খবর: বিবিসি ও সিএনএ।

চলতি বছর চাবাইদাওয়ের বাজারে আত্মপ্রকাশ ছিল এশিয়ার এই অর্থনৈতিক কেন্দ্রের সবচেয়ে বড় প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও)। চেংডুভিত্তিক কোম্পানিটি আইপিও থেকে প্রায় ৩৩০ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে। ফার্মটি জানিয়েছে, কার্যক্রম আপগ্রেড করতে ও সরবরাহ চেইনকে শক্তিশালী করতে তারা প্রায় অর্ধেক অর্থ ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে। তবে এরপর হংকং স্টক এক্সচেঞ্জের বেঞ্চমার্ক সূচক হ্যাং সেং সূচকে প্রতিটি শেয়ারের দাম ১৭ দশমিক ৫০ হংকং ডলার থেকে কমে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশে নেমে আসে। এ হিসেবে শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে ৩৮ শতাংশ। তবে লেনদেনের কিছুটা সময় এর দর ১২ দশমিক ৮০ হংকং ডলারে ওঠে।

তবে কোম্পানির এ ধরনের খারাপ পারফরম্যান্স শহরটির বিনিয়োগ আকর্ষণে সমস্যার সম্মুখীন হওয়াকেই ইঙ্গিত করছে।

চাবাইদাওয়ের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছেÑ‘একশ প্রকারের চা।’ চাবাইদাও খুচরা বিক্রির মাধ্যমে চীনের তৃতীয় বৃহত্তম তাজা চা পানীয়র চেইন হিসেবে পরিচিত।

এরই মধ্যে চাবাইদাওয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী বাবল টি সংস্থা মিক্সু (মিশুয়ে), গুমিং ও আন্টি জেনিও হংকংয়ের শেয়ার বিক্রি করার পরিকল্পনা করছে।

চাবাইদাওয়ের দুর্বল আত্মপ্রকাশ স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলোকে সামনে তুলে ধরছে। কেননা বর্তমানে কর্তৃপক্ষ শহরের পুঁজিবাজারে আস্থা পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছে। মনে করা হচ্ছে, বিনিয়োগকারীরা কভিড-১৯ মহামারির পর হংকংয়ের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং এর জাতীয় নিরাপত্তা আইনের পাশাপাশি চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মন্থর গতি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন।

পুঁজিবাজারে চাবাইদাওয়ের এই আত্মপ্রকাশকে ২০১৫ সালের পর সবচেয়ে দুর্বল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ব্লুমবার্গের হিসেবে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে যেসব কোম্পানি কমপক্ষে ৩৩০ মিলিয়ন বা ৩৩ কোটি ডলার তুলতে পেরেছে, তার মধ্যে চাবাইদাওয়ের এই পতন কের্ড হিসেবে বিবেচিত।

হংকং পুঁজিবাজারে আরেকটি প্রতিষ্ঠান তিয়ানজিন কনস্ট্রাকশন ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ লেনদেন শুরু করেছে। এই প্রতিষ্ঠানটিও ৩০ শতাংশ দর হারিয়েছে। তবে এর আগে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে ২০ মিলিয়ন বা দুই কোটি ডলার সংগ্রহ করেছে।

উল্লেখ্য, গত বছর হংকংয়ে আইপিও থেকে আসা অর্থের পরিমাণ দুই দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে গেছে। হ্যাং সেং সূচকটি গত বছরে এর মূল্যের ১৬ শতাংশের বেশি হারিয়েছে। তবে হংকংয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা জন লি সাংবাদিকদের বলেছেন, চীনের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো পুঁজিবাজারের উন্নয়নে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে, যাতে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এর মধ্যে রয়েছেÑহংকংয়ের আবাসন খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে ট্রাস্ট গঠন করা, আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি করা এবং শহরে ব্যবসা করছে, এমন শীর্ষ চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করা।

লি বলেন, কয়েক ডজন প্রতিষ্ঠান পাবলিক কোম্পানি হিসেবে হংকংয়ে ব্যবসা পরিচালনার জন্য মেইন ল্যান্ডের (চীনের মূল ভূখণ্ড) নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে আবেদন করেছে। এর মধ্যে উৎপাদন ও লজিস্টিক খাতের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও ফিনটেক খাতের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা এরই মধ্যে চীনের মূল ভূখণ্ডে হংকংয়ের শীর্ষ ইউনিকর্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে সক্রিয় ব্যবসা পরিচালনার জন্য অনুমোদন দিয়েছি। প্রসঙ্গত, যেসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক মূল্য এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলারের বেশি সেগুলো ইউনিকর্ন নামে পরিচিত।