নিজস্ব প্রতিবেদক: হজযাত্রীদের ভিসা জটিলতায় সৃষ্ট সমস্যায় এজেন্সিগুলোকে দায়ী করেছেন ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান। এসব এজেন্সির কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। গতকাল সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এজেন্সি যদি বিলম্ব না করতো তাহলে যাওয়ার ব্যাপারে এত জটিলতা হতো না। তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফাইন, লাইসেন্স, জরিমানা- এসব, নিয়ম অনুযায়ী যেগুলো নিতে পারি, সেই ব্যবস্থা নেবো। কারো প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করা হবে না।’
তবে শেষ পর্যন্ত সবাইকে হজে পাঠানোর বিষয়ে আশ্বস্ত করে মতিউর রহমান বলেন, ‘পরিস্থিতি যত জটিলই হোক সবাই যেতে পারবে। হজযাত্রীদের ভিসা জটিলতা প্রতিবারই হয়, তার সমাধানও করা হয়। ইনশা আল্লাহ, আমি আশাবাদী, ঠিক করতে পারবো। আশা রাখি, সবাইকে হজ করাবো।’
প্রসঙ্গত, সৌদি সরকারের কোটা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এবার এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাওয়ার কথা। তাদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৯৭ হাজার ১৪০ জন হজযাত্রীর জন্য সৌদি ই-হজ সিস্টেমে ভিসার আবেদন করা হলেও ভিসা পেয়েছেন ৫২ হাজার ৬০০ জন। যারা ভিসা পেয়েছেন, তাদের মধ্যে ৩২ হাজার ৫০৪ জন সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। বাকি ২০ হাজার ৯৬ জন এখনও সৌদি যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। ভিসা জটিলতার সঙ্গে সৌদি আরবে মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি এবং টানা দ্বিতীয়বারের হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে ভিসা ফি বৃদ্ধির ফলে এবারের হজযাত্রায় জটিলতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। যাত্রী না পাওয়ায় বুধবার পর্যন্ত ১৫টি হজ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। যেসব ফ্লাইটে ছয় হাজার যাত্রী জেদ্দা যেতে পারতেন।
এদিকে কতগুলো হজ এজেন্সির কারণে এ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে জানতে চাইলে ধর্মমন্ত্রী বলেন, সেই হিসেবে এখনও তারা পাননি।
অপরদিকে সৌদি আরবে ৭২০ রিয়ালে মোয়াল্লেম ঠিক করার কথা থাকলেও এখন দেড় হাজার থেকে ১৯০০ রিয়াল বাড়তি লাগায় হজ এজেন্সিগুলো বিপাকে পড়ে যায়। পরে তাদের কিস্তিতে বাড়তি টাকা শোধ করার সুযোগ দেওয়ায় আপাতত সমস্যার সমাধান হলেও সেজন্য হজযাত্রীদের বাড়তি অর্থ গুনতে হবে। এ ছাড়া এবারের হজযাত্রীদের মধ্যে যারা ২০১৫-১৬ সালেও হজ করেছেন, ভিসার জন্য তাদের বাড়তি দুই হাজার রিয়াল (৪৪ হাজার টাকা) করে দিতে হবে, যা আগে জানানো হয়নি। এ ধরনের যাত্রীর সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ হাজার হলেও এর প্রভাব পড়ছে অনেকের ওপর। পরিবারের একজনের ক্ষেত্রে এমন হলে অন্যদের যাওয়ায় আটকে থাকছে।
তবে বাড়তি মোয়াল্লেম ফি মওকুফ না হলে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেক্ষেত্রে সরকার টাকা দিয়ে হজযাত্রীদের সহযোগিতা করবে না। তবে এ টাকা যেন না দেওয়া লাগে সে বিষয়ে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করবো। ৪৫ হাজার হজযাত্রী এখনও ভিসা না পেলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তারা ভিসা পেয়ে যাবেন বলে আশা করেন ধর্মমন্ত্রী।
এছাড়া বিমানের এক ডজনের বেশি ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ২০টি অতিরিক্ত ফ্লাইটের ব্যবস্থা করতে মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।