Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 8:29 am

হজযাত্রা নিয়ে মন্ত্রীর শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভিসা জটিলতা আর মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি নিয়ে সমস্যাগুলো দুই-এক দিনের মধ্যে মেটাতে না পারলে এবার হজ যাত্রায় বড় ধরনের ঝামেলা তৈরি হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন  খোদ বিমান পরিবহনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। গতকাল বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে হজযাত্রী পরিবহন নিয়ে এক বৈঠক শেষে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, এবার হজযাত্রা শুরুর পর এ পর্যন্ত বিমানের ১২টি এবং সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনসের তিনটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে যাত্রী না পাওয়ার কারণে। এ ১৫টি ফ্লাইটে ছয় হাজার যাত্রী সৌদি আরবে যেতে পারতেন।

মন্ত্রী বলেন, দুই-একদিনের মধ্যে এর সমাধান করতেই হবে। পরিস্থিতি জটিল হোক, আর যা-ই হোক, এটা করতে হবে আমাদের, আমি এটা মনে করি। এক লাখের বেশি হজযাত্রীর মধ্যে ভিসা হয়েছে ৪৬ হাজার ৭৯২ জনের। তাদের মধ্যে ২৯ হাজার ৮৩৯ জন রওনা হতে পেরেছেন। অর্থাৎ, প্রায় ১৭ হাজারের বেশি হাজযাত্রীর যাওয়ার কথা থাকলেও যেতে পারেনি বা যাননি।

তিনি বলেন, এ বছর দুর্ভাগ্যজনক কিছু ঘটনা ঘটে গেছে। যেখানে আমরা প্রতিবছর হজযাত্রীদের বড় একটি অংশকে প্রথম ১০ দিনেই চলে যেতে দেখি, এবার দেখা গেল হাজযাত্রীরা যেতে পারেননি। এর বাইরে আরও ৪৭ হাজার ৭৬১ জনকে এবার হজের আগে জেদ্দা পৌঁছে দিতে হবে। বিমান ২৬ আগস্ট এবং সৌদিয়া ২৮ আগস্ট পর্যন্ত হজ ফ্লাইট চালাবে। বিমানের পরিকল্পনায় এ লস ধরেই এক্সট্রা ফ্লাইটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু আজকালের মধ্যে বিষয়গুলোর সমাধান যদি না হয় তাহলে একটি সমস্যা দাঁড়িয়ে যাবে।

মন্ত্রী বলেন, মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি, ভিসা জটিলতা এবং যারা ২০১৫-১৬ সালে হজ করে এসেছেন, এবার তাদের কাছ থেকে সৌদি আরব অতিরিক্ত ফি নেওয়ায় এ জটিলতা তৈরি হয়েছে। মোয়াল্লেম ফির সমাধান হয়ে যাবে, বারকোড তারা এখন পাচ্ছে। ১৮ থেকে ২০ হাজার হজযাত্রীর এ সমস্যা হয়েছে।

জানা গেছে, সৌদি আরবে ৭২০ রিয়ালে মোয়াল্লেম ঠিক করার কথা থাকলেও এখন দেড় হাজার থেকে ১৯০০ রিয়াল বাড়তি লাগায় হজ এজেন্সিগুলো বিপাকে পড়ে যায়। পরে তাদের কিস্তিতে বাড়তি টাকা শোধ করার সুযোগ দেওয়ায় আপাতত সমস্যার সমাধান হলেও সেজন্য হজযাত্রীদের বাড়তি অর্থ গুনতে হবে।

বাংলাদেশ থেকে এবার হজে যাচ্ছেন এক লাখ ২৮ হাজার মানুষ। তাদের মধ্যে যারা ২০১৫-১৬ সালেও হজ করেছেন, তাদের ভিসার জন্য দুই হাজার রিয়াল (৪৪ হাজার টাকা) করে বাড়তি দিতে হবে, যা আগে জানানো হয়নি। এ ধরনের যাত্রীর সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ হাজার হলেও এর প্রভাব পড়ছে অনেকের ওপর। পরিবারের একজনের ক্ষেত্রে এমন হলে অন্যদের যাওয়ায় আটকে থাকছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ ফি মওকুফ করার জন্য যোগাযোগ করা হয়েছে। বুধবারই এ ব্যাপারে বৈঠক হওয়ার কথা। তবে দুই হাজার রিয়াল যদি দিতেই হয়, তাহলে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে বিজ্ঞপ্তি দিতে বলা হয়েছে।

ভিসা না হওয়ার বিষয়টিকে চিহ্নিত করে মেনন বলেন, ই-ভিসার ক্ষেত্রে অনেক সময় কোনো গ্রুপে হয়তো ১৬ জনের ভিসা হলো না, সেক্ষেত্রে পুরো গ্রুপ মুভ না করলে জটিলতা হয়। এজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সৌদি হজ সিস্টেমে এনরোলমেন্ট হয়েছে ৯২ হাজার পাসপোর্ট, কিন্তু ভিসা হয়েছে ৪৬ হাজার। দূতাবাসের সঙ্গে আরও যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে বলা হয়েছে। যে জটিলতা হয়েছে, তার সমাধান করা হবে।

তিনি বলেন, হজযাত্রীদের বলা হচ্ছে, আপনারা ভিসা না করে থাকলে ভিসা করে নিন। আর ভিসা করে থাকলে ফ্লাইট নিন। যদি ফ্লাইট না নেন আপনার যাওয়া নিয়ে অসুবিধা হতে পারে। সবার মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে এটা জানানো হচ্ছে।