নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার খরচ গতবারের চেয়ে আরও বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি-২০১৮’ এবং ‘হজ প্যাকেজ-২০১৮’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এবারের হজ প্যাকেজের বিস্তরিত জানান। তার দেওয়া তথ্য মতে, সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১ এর আওতায় হজে যেতে এবার ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৯২৯ টাকা খরচ হবে। গত বছর এ প্যাকেজের ব্যয় ছিল ৩ লাখ ৮১ হাজার ৫০৮ টাকা। প্যাকেজ-২ এর আওতায় ৩ লাখ ৩১ হাজার ৩৫৯ টাকা খরচ হবে, যা গত বছর ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ টাকা নির্ধারিত ছিল। সে হিসেবে সরকারিভাবে গতবারের থেকে এবার প্যাকেজ-১ এ ১৬ হাজার ৪২১ টাকা এবং প্যাকেজ-২ এ ১২ হাজার চার টাকা বেড়েছে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এবার সর্বনি¤œ ১ লাখ ৬৮ হাজার ২৭৭ টাকা খরচ নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার, যা গত বছর ছিল এক লাখ ৫৬ হাজার ৫৩৭ টাকা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সুবিধার ধরন অনুযায়ী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে টাকার অঙ্কে হেরফের হবে।
জাতীয় হজ ও ওমরাহ্নীতিতে এবার কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, প্রাক-নিবন্ধন করতে এনআইডি থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রবাসীরা পাসপোর্টের মাধ্যমে প্রাক-নিবন্ধন করতে পারবেন। প্রাক-নিবন্ধন করেও যারা চূড়ান্ত নিবন্ধন করবেন না তাদের নিবন্ধনের মেয়াদ আরও এক বছর থাকবে। তবে পর পর দুই বছর চূড়ান্ত নিবন্ধন না করলে ধরে নেওয়া হবে তিনি হজে যেতে আগ্রহী না।
সচিব বলেন, এবার থেকে নিবন্ধনকারীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। কারণ পাসপোর্ট করার সময় পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়। সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রতি ৪৫ জন হজযাত্রীর জন্য একজন করে গাইড থাকবে। হজের দুই মাস আগে এসব গাইডের তথ্য হজ অফিসে দিতে হবে।
হজনীতির অন্যান্য দিক সম্পর্কে বলা হয়, মৃত্যু বা গুরুতর অসুস্থতার কারণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রাক-নিবন্ধনকারীদের মধ্যে তা প্রতিস্থাপন করা যাবে। তবে একটি এজেন্সির মোট হজযাত্রীর চার শতাংশের বেশি প্রতিস্থাপন করা যাবে না। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এবার থেকে সরকার হজযাত্রীদের ট্রলি সরবারহ করবে না, ট্রলি হজযাত্রীদের কিনতে হবে।
বিমান ভাড়া বাড়ার বিষয়ে এক প্রশ্নে শফিউল আলম বলেন, ডলারের দাম বেড়েছে, সব মিলিয়ে খুব বেশি বাড়ানো হয়নি। গতবার মোট বিমান ভাড়া ছিল একলাখ ২৪ হাজার ৭২৩ টাকা। প্রত্যেক হজ এজেন্সি কমপক্ষে ১৫০ জন এবং সর্বোচ্চ ৩০০ জন হজযাত্রী নিতে পারবে। কোনোক্রমেই এক ফ্লাইটে তিনটি এজেন্সির বেশি যাত্রী পাঠানো যাবে না। মক্কা থেকে দুই কিলোমিটারের বেশি দূরে বাসস্থান ভাড়া করলে হজ এজেন্সিগুলোকে গাড়ির ব্যবস্থা করতে হবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে যারা হজ করেছেন বা হজে যাওয়ার ভিসা পেয়েও হজ করেননি তারা যদি এবার হজে যেতে চান তাহলে অতিরিক্ত ২ হাজার ১০০ রিয়েল পরিশোধ করতে হবে। যারা হজ করেছেন তাদের হজে যেতে নিরুৎসাহিত করতেই এ অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে।
উল্লেখ্য, সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এবার এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাত হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ২০ হাজার জন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২১ আগস্ট হজ হতে পারে।