নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছর যারা হজে যেতে চান, তাদের জন্য হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার, যাতে খরচ বাড়ছে লাখ টাকার বেশি। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় সরকারিভাবে দুটি এবং বেসরকারিভাবে হজে যাওয়ার জন্য একটি প্যাকেজ চ‚ড়ান্ত করা হয়।
সভা শেষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান সাংবাদিকের বলেন, সরকারিভাবে হজে যেতে প্রথম প্যাকেজে এ খরচ হবে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। আর দ্বিতীয় প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা। এছাড়া বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের জন্য জনপ্রতি খরচ ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩০ টাকা ঠিক করা হয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালে ওই বছরের জন্য হজ প্যাকেজ অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। তবে মহামারির কারণে ওই বছর বা গত বছর বাংলাদেশ থেকে কেউ হজ করতে সৌদি আরবে যেতে পারেননি।
২০২০ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল। প্যাকেজ-১-এ সর্বমোট ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, প্যাকেজ-২-এ তিন লাখ ৬০ হাজার এবং প্যাকেজ-৩-এ তিন লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ ধরা হয়েছিল। আর বেসরকারি প্যাকেজে তিন লাখ ৫৮ হাজার টাকা খরচ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল।
সে হিসেবে এবার হজে যাওয়ার খরচ বাড়ছে লাখ টাকার বেশি। বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার জন আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ৫৩ হাজার ৫৮৫ জন এবার হজে যেতে পারবেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবার ৯ জুলাই হজ হতে পারে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, হজ এজেন্সিগুলো সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকজ-১ ও প্যাকেজ-২ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে।
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি শাহাদাত হোসেন তসলিম জানান, আজ বৃহস্পতিবার তারা তাদের পূর্ণাঙ্গ হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী জানান, দ্বিপক্ষীয় হজচুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩ হাজার ৫৮৫সহ মোট ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজযাত্রী হজ পালনের সুযোগ পাবেন।
হজযাত্রীর বিমান ভাড়া, সৌদি আরবের বাড়ি ভাড়া, সার্ভিস চার্জ, মোয়াল্লেম ফি, জমজমের পানি, খাবার খরচ এবং অন্যান্য ফি হিসাব করে সরকারি ব্যবস্থাপনার জন্য দুটি প্যাকেজ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার এজেন্সিগুলোর জন্য একটি প্যাকেজের প্রস্তাব করা হয়েছে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী জানান, হজের জন্য বাংলাদেশ পর্বে কোনো ব্যয় বৃদ্ধি হয়নি। ২০২০ সালে সৌদি রিয়ালের বিনিময় হার ছিল ২৩ টাকা। আজকে এই হারের পরিমাণ ২৪ টাকা ৩০ পয়সা। এটিও প্যাকেজ মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এছাড়া সৌদি আরব পর্বে সকল খাতের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট, সার্ভিস চার্জ, কর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সৌদির কিছু খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন মোয়াল্লেম সার্ভিসের খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। তাছাড়া সেখানে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। বাড়ি ভাড়া এখন সৌদি সরকার কাছাকাছি দূরত্বে যে বাড়িগুলো আছে। এছাড়া দুই দেশের টাকার মানের পার্থ্যকের কারণেও প্যাকেজের দাম বেড়েছে।
২০২০ সালে ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকার তৃতীয় আরেকটি প্যাকেজ ছিল। তবে এ বছর তৃতীয় প্যাকেজ রাখা হয়নি বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।