নিজস্ব প্রতিবেদক: সুষ্ঠুভাবে হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনা করতে নতুন একটি আইন করতে যাচ্ছে সরকার। এ আইন পাস হলে কোনো এজেন্সি সৌদি আরব গিয়ে অপরাধ করলেও বাংলাদেশে সেই অপরাধের বিচার করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে ‘হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনা আইন ২০২০’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এতদিন হজ ব্যবস্থাপনা চলত একটা নীতিমালার মাধ্যমে। নীতিমালার মাধ্যমে চলার কারণে অনেক সময় ব্যবস্থা নিতে অসুবিধা হতো। ব্যবস্থা নিলে সংশ্লিষ্টরা আবার হাইকোর্টে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসত।
২০১১ সাল থেকে সৌদি আরব হজ ব্যবস্থাপনাকে পরিবর্তন করে ফেলেছে। পাকিস্তান, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া আইন করে ফেলেছে। হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে আমাদের ইকুইপ্ট করতে গেলে একটা আইনি কাঠামোর প্রয়োজন। ২০১২ সালে মন্ত্রিসভার নির্দেশনা ছিল নীতিমালার পরিবর্তে আইন করার।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন আইনে হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনার সার্বিক দায়িত্ব সরকারের ওপর ন্যস্ত থাকবে। সরকার হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সৌদি সরকারের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতার ভিত্তিতে সে দেশের যে কোনো স্থানে হজ অফিস স্থাপনসহ সার্বিক কার্যক্রম নিতে পারবে।
আইনের অধীনে নিবন্ধন ছাড়া কাউকে ওমরা বা হজে কেউ পাঠাতে পারবে না। যদি কেউ এ বিষয়ে কোনো অনিয়ম করে, তাহলে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত তদন্ত ও শুনানির সুযোগ দিয়ে হজ ও ওমরা এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে। হজের চুক্তি এখানে হওয়ার পর কেউ সৌদিতে গিয়ে ঠকালে তবে ওই অপরাধ এই দেশে (বাংলাদেশে) হয়েছে বলে গণ্য করে এই আইন অনুযায়ী বিচার করা হবে।
এছাড়া হজ ও ওমরা এজেন্সিগুলো অনিয়ম করলে তাদের নিবন্ধন বাতিলের পাশাপাশি জরিমানা করা হবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
নতুন আইনে হজ এজেন্সিগুলো অনিয়ম করলে তাদের নিবন্ধন বাতিলের পাশাপাশি সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। আর ওমরা এজেন্সি অনিয়ম করলে তারা নিবন্ধন হারানোর সঙ্গে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার মুখে পড়বে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। অনিয়মের জন্য পরপর দুই বছর ওয়ার্নিং দেয়া হলে দুই বছরের জন্য লাইসেন্স বাতিল হবে।
হজ এজেন্সিগুলো স্বত্ব পরিবর্তন করতে চাইলে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, দৈব দুর্বিপাক, মৃত্যু, দুর্ঘটনা, হজযাত্রীদের আকস্মিক প্রয়োজনে আইন অনুযায়ী সরকার আপদকালীন তহবিল গঠন করবে।