নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাস মহামারির বিস্তারে বিশ্বের শীর্ষ ২০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ঢুকে পড়ার পর রাজধানীকে দিয়ে শুরু করে সংক্রমণের কেন্দ্র বিবেচনায় এলাকাভিত্তিক লকডাউনের পথে যাচ্ছে সরকার। দু-এক দিনের মধ্যে ঢাকার কিছু এলাকায় ‘পাইলট ভিত্তিতে’ লকডাউন শুরু করা হবে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কোভিড-১৯-বিষয়ক মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান খান জানিয়েছেন।
গতকাল দুপুরে তিনি বলেন, ‘হটস্পট বা ক্লাস্টার এরিয়া বিবেচনায় শুরুতে আমরা পাড়া, মহল্লা বা ওয়ার্ড এলাকা লকডাউন করব। শুরুতে সীমিত পরিসরে ঢাকার মধ্যেই লকডাউন করব, কারণ ঢাকাতেই কোভিড-১৯-এর রোগী বেশি। পরে আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করে অন্যান্য জেলা শহরেও লকডাউনের পথে হাঁটব।’
মহামারির বিস্তার রোধে দুই মাসের বেশি সময় সাধারণ ছুটি শেষে ৩১ মে থেকে সংক্রমণের মাত্রা ও মৃত্যুর হারের সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিন্ম হিসাবে দেশকে লাল, হলুদ ও সবুজ জোনে ভাগ করে করণীয় নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিবেচনায় দেশের বিভিন্ন এলাকা লাল বা হলুদ জোনে ভাগ করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বড় এলাকা না ধরে ক্ষুদ্র পরিসরে লকডাউন করতে চায়।
হাবিবুর রহমান খান বলেন, ‘আমরা আইসিটি বিভাগের সহায়তায় কোন কোন এলাকা লকডাউন করব, তার ম্যাপিং শুরু করেছি। এতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যোগ দিয়েছেন। পুরো কাজটি শেষ হয়নি। শেষ হলেই আগামী দু-এক দিনের মধ্যে আমরা কাজ শুরু করছি।’
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আরও জানিয়েছেন, আজ রোববার থেকে রাজধানীর ধানমন্ডির রাজাবাজার ও পুরান ঢাকার ওয়ারী এলাকাকে পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউন ঘোষণা করা হতে পারে।
হাবিবুর রহামন বলেন, যেসব এলাকায় রোগী বেশি সেসব এলাকাকে ‘রেড জোন’ বলে ঘোষণা দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ওই এলাকা পুরোপুরি লকডাউন করে দেওয়া হবে। একই পদ্ধতিতে ইয়েলো ও গ্রিন জোন চিহ্নিত করা হবে। এক্ষেত্রে ইয়েলো জোনে কেউ খুব জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতে চাইলে সেই সুযোগ দেওয়া হবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত শুক্রবার পুরো কক্সবাজার পৌরসভাকে রেড জোনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০ জুন পর্যন্ত কক্সবাজার পৌর এলাকা লকডাউনের আওতায় থাকবে।
করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলায় সরকারের জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলামের ধারণা, আগামী এক সপ্তাহে বাংলাদেশে সংক্রমণের এই গ্রাফ আরও ঊর্ধ্বমুখী হবে।
উল্লেখ্য, যে এলাকায় জনবসতির প্রতি লাখে ৩০ থেকে ৪০ জন করোনা রোগী রয়েছে, সেই এলাকাকে রেড জোন হিসেবে ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে। এরই অংশ হিসেবে পরীক্ষামূলকভাবে ওয়ারী ও রাজাবাজার এলাকায় লকডাউন ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে।