হতাশ সেন্ট্রাল ফার্মার বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মালিকানা পরিবর্তনের বিষয়টি বাতিল হয়ে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা হতাশ। গত ডিসেম্বরে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ১৫ টাকার নিচে। ওই সময় সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের মালিকানা অ-তালিকাভুক্ত আলিফ গ্রুপ কিনে নিচ্ছে বলে বাজারে গুঞ্জন শোনা যায়। এর পর থেকেই কোম্পানিটির শেয়ারদর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। পরবর্তী সময়ে গত ফেব্রুয়ারিতে সেন্টাল ফার্মার মালিকানা পরিবর্তনের খবর স্টক এক্সচেঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে এলে কোম্পানিটির শেয়ারদর ওঠে ৩৬ টাকায়। এরপর টানা দুই মাসেরও বেশি সময় কোম্পানিটির শেয়ারদর ৩০-৩২ টাকায় লেনদেন হয়। গতকাল মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ২১ টাকা ৮০ পয়সা।

জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেন্ট্রাল ফার্মা ও আলিফ গ্রুপের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। এ বিষয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সেন্ট্রাল ফার্মা জানিয়েছিল, চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ পাঁচজন পরিচালকই তাদের সব শেয়ার আলিফ গ্রুপ বা এর কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা পরিচালকদের কাছে বিক্রি করে দেবে। বøক মার্কেটে শেয়ার হস্তান্তর শেষে চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগসহ নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করবে আলিফ গ্রুপ। তবে কবে নাগাদ শেয়ার হস্তান্তর বা নতুন পরিচালনা পর্ষদ আসবে, এ বিষয়ে সে সময় কিছু জানানো হয়নি। সর্বশেষ গত সোমবার স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কোম্পানিটি জানিয়েছে, শুরুতে যথেষ্ট আগ্রহ থাকলেও এমওইউ স্বাক্ষরের আট মাস পেরিয়ে গেলেও আলিফ গ্রুপ তা বাস্তবায়নে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দীর্ঘসূত্রতার কারণে শেষ পর্যন্ত চুক্তিটি বাতিল হয়ে গেছে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেন্ট্রাল ফার্মা কর্তৃপক্ষ কোম্পানিটিকে জুয়ার কোর্ট বানিয়ে বাজার থেকে কোটি টাকা লুটপাট করেছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এ ঘটনার একটি নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া জরুরি। যাতে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা যায়। অন্যথায় তালিকাভুক্ত অন্যান্য কোম্পানিও সেন্ট্রাল ফার্মার পথে অনৈতিকভাবে হাঁটতে শুরু করতে পারে।

জানা যায়, বাংলাদেশে ব্যবসা করা ইউরোপীয় ও মার্কিন কোম্পানি গ্যাটকো ও বাংলা ক্যাটের হাত ধরে আশির দশকে সেন্ট্রাল ফার্মার যাত্রা হয়। পরবর্তী সময়ে অন্য ব্যবসায় যুক্ত হয়ে ১৯৯৩ সালে স্থানীয় মেট্রো গ্রæপের কাছে কোম্পানিটির মালিকানা হস্তান্তর করে গ্যাটকো। এরপর পুরোনো যন্ত্রপাতির সঙ্গে নতুন যন্ত্রপাতি বসিয়ে ১৯৯৪ সালে মেট্রো গ্রুপের অধীন নতুন করে উৎপাদনে আসে কোম্পানিটি। ওই সময় সেন্ট্রাল ফার্মার পরিচালক হিসেবে যোগ দেন বর্তমান এমডি মনসুর আহমেদ। তবে কয়েক বছর পরই মনসুর আহমেদের কাছে সম্পূর্ণ মালিকানা হস্তান্তর করে দেয় মেট্রো গ্রুপ। এরপর তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব নিয়ে ২০০২ সাল থেকে নতুন উদ্যমে ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু ১৫ বছরের মাথায় চলতি বছরের ফেব্রæয়ারিতে আবারও মালিকানা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বর্তমান পর্ষদ।

অন্যদিকে দেশের বস্ত্র, তৈরি পোশাক, মার্চেন্ট ব্যাংক ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান, আবাসন, গণমাধ্যম, ক্রীড়া ও শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ রয়েছে আলিফ গ্রুপের। এরই মধ্যে গ্রুপটি মূল বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সিএমসি কামাল টেক্সটাইলস মিলস এবং ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) বাজারে থাকা কোম্পানি সজীব নিটওয়্যার লিমিটেড কিনে নিয়েছে। আলিফ গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন মো. আজিজুল ইসলাম। তাছাড়া ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন তার ছেলে মো. আজিমুল ইসলাম।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০