প্রতিনিধি, বান্দরবান: বান্দরবানে অপহরণের পর হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এক আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে এলাহী ভূইয়ার আদালত এ আদেশ দেন।
আদালত ও আইনজীবী সূত্র জানা যায়, রোয়াংছড়ি উপজেলার খানসামা পাড়া থেকে চট্টগ্রামের চন্দ্রনাইশের গরু ব্যবসায়ী ছোট্ট মিয়া (৪৫) অপহরণ করে গলা কেটে হত্যা করে লাশ হ্লাপাইক্ষ্যং মৌজার সারাম্রাং ঝিরিমুখে মাটি চাপা দেন আসামিরা। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই মো. আমজু মিয়া বাদী হয়ে বান্দরবান সদর থানায় ২০০৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় পুলিশ প্রধান আসামি উচিংনু মারমাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসামি হত্যার ঘটনা স্বীকার করে সম্পৃক্ত বাকি ৪ আসামির তথ্য দেন। দীর্ঘদিন মামলাটি আদালতে চলার পর সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অপরাধের সাক্ষ্যপ্রমাণ অপসারণ করায় আরও ৭ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেনÑউচিংনু মারমা (২২), উবা চিং মারমা (৩০), চিংনু মং প্রকাশ হদা (২৩), মংনুমং প্রকাশ মংনু (৫০) এবং মংথু প্রকাশ মং ক্যাসিং মারমা। আসামিদের প্রথম চারজন সদর উপজেলার লুলাইন হেডম্যান পাড়ার এবং শেষেরজন লুলাইন পুনর্বাসন পাড়ার বাসিন্দা। আসামিদের মধ্যে উচিংনু মারমা (২২) রায় ঘোষণার সময় প্রধান আসামি উচিংনু মারমা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অন্যরা পলাতক রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান জানান, ভিকটিম ছোট্ট মিয়া চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার দিয়াকুল এলাকার মৃত আনু মিয়ার পুত্র। গরু কিনতে এসে রোয়াংছড়ি উপজেলার খানসামা বাজার থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন। ২০০৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ প্রধান আসামি উচিংনু মারমা বর্ণনামতে ঘটস্থলে গিয়ে মাটি খুঁড়ে ভিকটিম ছোট্ট মিয়ার গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করেন। ওই দিন নিহতের ভাই মো. আমজু মিয়া বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে এলাহী ভূইয়া ৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি মো. ইকবাল করিম বলেন, হত্যা মামলাটি দীর্ঘ ১৫ বছর আদালতে চলমান ছিল। বিভিন্ন সাক্ষীদের বক্তব্য এবং আসামির স্বীকারোক্তির তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত হত্যাকারী ৫ আসামিকে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ড, দশ হাজার টাকা জরিমানা এবং দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে প্রত্যেককে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন।
