আমানুর রহমান খোকন: সমাজে সেবার ধরনে ভিন্নতা রয়েছে। কেউ এতিমের সহায় হয়ে পাশে দাঁড়ান, কেউ মিসকিনদের পাশে থাকেন। কেউবা দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করেন। অনেকে গরিব ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করেন। এরপরও ব্যতিক্রম কিছু উদ্যোগ রয়েছে। যেমন পুষ্টিহীনতায় ভোগা শারীরিকভাবে অক্ষম শিশুদের নিয়ে কাজ করেন কেউ কেউ। এমনি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলোখানা অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়।
২০১৩ সালে কুড়িগ্রাম শহরে প্রতিষ্ঠিত হয় এ বিদ্যালয়। হলোখানা প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থার আদলে পরিচালিত এ বিদ্যালয় প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করছে। এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত আছেন এলাকার উচ্চশিক্ষিত এক ঝাঁক তরুণ-তরুণী। প্রধান শিক্ষক হিসেবে রয়েছেন আখলাছুর রহমান ও সাইফুর ইসলাম। স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে আছেন সাদিয়া মার্জান, জাহাঙ্গীর আলম, জাহানারা বেগম, সাহিদুল ইসলাম, এইচএম শফি, রতনা খাতুন, শিরিনা বেগম, শাহিনুর রহমান, রতন মিয়া ও হাসিনা বেগম। ২০১৪ সালে তারা এলাকার প্রায় সব বাড়ি ঘুরে দেড়শ শিশু নিয়ে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে এখানে ১৬০ শিক্ষার্থী রয়েছে।
বিদ্যালয়ে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছেন হলোখানা ইউপি চেয়ারম্যান মো. উমর ফারুখ ও জেলা পরিষদ মহিলা সদস্য মাহাবুবা বেগম লাভলী। হলোখানা ইউনিয়নে বড় দুটি টিনের ঘর নির্মাণ করেছেন তারা। এখানে রয়েছে পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ ও একটি অফিস। পাকা ল্যাট্রিন ও পাকা নলকূপও স্থাপন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের
আনা-নেওয়ার জন্য রয়েছে ভ্যানগাড়ি।
সকাল ৯টা হতে দুপুর ২টা পর্যন্ত শিশু শ্রেণিসহ ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির ক্লাসে অটিস্টিক, বাক, শ্রবণ, দৃষ্টি, বুদ্ধি ও বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধীদের পাঠদানসহ অন্যান্য শিক্ষা দিচ্ছেন সমাজসেবীরা। নিজস্ব অর্থায়নে বিদ্যালয় সাজিয়ে প্রতিদিন শিশুদের বিদ্যালয়ে খাবার দিচ্ছেন তারা।
কুড়িগ্রাম সদর সমাজসেবা কর্মকর্তা এসএম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বিদ্যালয়টি একাডেমিক স্বীকৃতি পেলে আমরা
শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ও শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিসহ সরকারি আরও অনেক সুবিধা দিতে পারবো।’ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একাডেমিক স্বীকৃতি না পাওয়ায় পঞ্চম শ্রেণি চালু করা যাচ্ছে না।
কুড়িগ্রাম