নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ীদের সাথে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের চলমান সংঘর্ষের ঘটনায় হল-ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন ঢাকা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, যেকোনো মূল্যে হল-ক্যাম্পাসে অবস্থান চালিয়ে যাবেন তারা।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল সোয়া চারটায় ঢাকা কলেজের শহীদ আ. ন. ম নজিব উদ্দিন খান খুররম অডিটোরিয়ামে সম্মিলিতভাবে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতারা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যানের কথা জানান।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষের অপসারণসহ ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনার বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফুয়াদ হাসান বলেন, প্রয়োজনে আমরা লাশ হয়ে বের হব। তবু হল ক্যাম্পাস ছাড়ব না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা চালানো হয়েছে, এ ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা অধ্যক্ষকে বলেছি সুন্দরভাবে সমাধান করতে। তিনি যদি তা না পারেন, তবে তার পদত্যাগ দাবি করছি।
এর আগে বিকেলে ৫ মে পর্যন্ত আবাসিক হল বন্ধের নোটিশ দেয় ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ। নোটিশে শিক্ষার্থীদের বিকেলের মধ্যে হল ছাড়তে বলা হয়।
এদিকে আজ বিকেলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এ সময় পুলিশ কলেজের মূল ফটকের সামনে থেকে ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কমপক্ষে ১০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে পুলিশ। এতে ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকা ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসের ভেতরে কয়েকটি স্থানে আগুন ধরিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, সমঝোতার খবরে ক্যাম্পাসের বাইরে বের হতেই হামলার শিকার হন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। ব্যবসায়ীদের হামলায় আহত হন দুই শিক্ষার্থী। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্যাম্পাস থেকে ফের বেরিয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে ব্যবসায়ীদের ধাওয়া করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় উভয়পক্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে ফের শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয়। এখন আবারও নিউমার্কেট এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সোমবার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় কথা কাটাকাটির জেরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী ও দুই ব্যবসায়ী আহত হন। আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও।
এরপর মঙ্গলবার সকালে আবারও সংঘর্ষে জড়ান শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে তাদের ইট-পাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। ছাত্রদের অনেকে হেলমেট পরে হাতে লাঠি নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। বিকেল ৩টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ চলছিল। সংঘর্ষে প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন।