নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের ইউরোপীয় ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ডের কারখানা পরিদর্শনের মেয়াদ ছয় মাস বৃদ্ধি করেছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশে অ্যাকর্ডের কার্যক্রম সংক্রান্ত দুটি রুলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট গতকাল বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ এবং বিচারপতি মো. সেলিমের যৌথ বেঞ্চ পোশাক-কারখানা স্মার্ট জিনসের করা একটি এবং গার্মেন্ট শ্রমিক কর্মচারী লীগের অপর একটি রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে স্বপ্রণোদিত হয়ে এ সংক্রান্ত রুল দেন। রুলে বলা হয়, অ্যাকর্ড নামের ক্রেতা জোটটি ‘ট্রানজিশনাল অ্যাকর্ড’ নামে আরও ছয় মাস তাদের কার্যক্রম চালাতে পারবে।
গার্মেন্ট শ্রমিক কর্মচারী লীগের আইনজীবী ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম জানান, গত ৪ এপ্রিল, ২০১৮ তারিখে হাইকোর্ট অ্যাকর্ডের কার্যকারিতা বাড়ানো সম্পর্কিত একটি স্থগিতাদেশ প্রদান করেছিল। আজ (গতকাল) শুনানি শেষে এ বিষয়ে রুল দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, অ্যাকর্ড এখন ট্রানজিশনাল অ্যাকর্ড নামে সরকার ঘোষিত ‘ট্রানজিশন মনিটরিং কমিটির সদস্য হিসেবে তাদের কার্যক্রম আরও ছয় মাস চালিয়ে যেতে পারবে।
উল্লেখ্য, সাভারের রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের কারখানাগুলোর অবকাঠামো যাচাই করার জন্য ইউরোপের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো জোটবদ্ধভাবে অ্যাকর্ড গঠন করে। অন্যদিকে একই কাজের জন্য উত্তর আমেরিকার ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো অ্যালায়েন্স নামে অপর একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করে। এ দুই প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে দেশের প্রায় চার হাজার কারখানা পরিদর্শন করা হয়। একই সময় জাতীয় উদ্যোগেও কারখানা পরিদর্শন ও সংস্কারকাজ করা হয়। পাঁচ বছর মেয়াদে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স বাংলাদেশে কাজ শুরু করে। সে হিসেবে চলতি বছরের জুনে সংস্থা দুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
মেয়াদের শেষ বর্ষে এসে জানা গেছে, অ্যাকর্ডের অধীনস্থ কারখানাগুলোর মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ কারখানা এখনও সংস্কার করা হয়নি। তাছাড়া অব্যাহতভাবে কারখানাগুলোকে পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখা প্রয়োজন। এ জন্য অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স তাদের কাজ শেষ করলেও আরসিসি নামে একটি জাতীয় তদারকি সংস্থা গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু গত সপ্তাহে অ্যাকর্ড গণমাধ্যমকে জানায়, দেশীয় তদারকি সংস্থা এখনও সক্ষমতা অর্জন করেনি। তাই অ্যাকর্ড আরও কিছুদিন কাজ চালিয়ে যাওয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করে। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সমন্বয়ে একটি ‘ট্রানজিশন মনিটরিং কমিটি’ গঠন করা হয়। ওই কমিটির সদস্য হিসেবে অ্যাকর্ডকেও ট্রানজিশনাল অ্যাকর্ড নামে আরও কয়েক মাস কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় সরকারের তরফে। এবার হাইকোর্ট থেকেও এ সংক্রান্ত নির্দেশ দেওয়া হলো।