নিজস্ব প্রতিবেদক: রিকন্ডিশন্ড হাইব্রিড গাড়ি আমদানিতে শুল্ক রেয়াত সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকলস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)। একই সঙ্গে হাইব্রিড গাড়ি আমদানিতে অবচয় হার ও সিসি সø্যাব পুনর্নিধারণ, এসআরও’র ভাষা সহজ করা, মাইক্রোবাসের ওপর সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারেরও সুপারিশ করেছে সংগঠনটি।
গতকাল বুধবার প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব প্রস্তাব করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সম্মেলন কক্ষে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের এ প্রাক-বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এনবিআর সদস্য (মূসকনীতি) ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে বারভিডা সভাপতি হাবিব উল্লাহ ডন তাদের প্রস্তাব তুলে ধরেন। এ সময় এনবিআর সদস্য (শুল্কনীতি) মো. লুৎফর রহমান, সদস্য (করনীতি) পারভেজ ইকবাল, বারভিডার সাবেক মহাসচিব মাহবুবুল হক চৌধুরী বাবর, বুয়েট অধ্যাপক ড. আরিফ হাসান মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, ‘হাইব্রিড গাড়ি জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বিশ্বব্যাপী এ প্রযুক্তির মোটরযানের ব্যবহার বাড়ছে। এর চেসিস নম্বর ভিন্ন হওয়ায় গাড়ি শনাক্ত করা সহজ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় কম। খুচরা যন্ত্রাংশও সহজলভ্য।’
তিনি বলেন, ‘অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এ গাড়ি আমদানি হলে ফসিল ফুয়েল ও সিএনজির ব্যবহার অনেকাংশে কমে যাবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ ইলেকট্রিক ও সোলার চালিত গাড়ির দিকে মনোনিবেশ করলেও এখনও হাইব্রিড গাড়ি আমদানিতে স্থির নীতিমালা তৈরি হয়নি।’
মাহবুবুল হক চৌধুরী বাবর বলেন, ‘গাড়ির এসআরও সহজবোধ্য নয়। এ সুযোগে তৃণমূলে দুর্নীতির সৃষ্টি হয়। বুয়েট অধ্যাপক ড. আরিফ হাসান মামুন বলেন, হাইব্রিড গাড়ি আমদানির সুযোগ দেওয়া উচিত। তবে ব্যাটারি সাপোর্ট ও অ্যাকসেসরিজের নিশ্চয়তা দিতে হবে।’
সংগঠনটির প্রস্তাবে বলা হয়, নতুন গাড়ি আমদানিকারকদের শুল্ক রেয়াত সুবিধায় হাইব্রিড গাড়ি আমদানির সুযোগ দেওয়া হলেও সেটি ব্যর্থ হয়েছে।
কারণ দেশের সড়কে চলাচল করা ব্যক্তিগত গাড়ির ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশই রিকন্ডিশন্ড। বারভিডাকে হাইব্রিড গাড়ি আমদানির সুযোগ দেওয়া হলেও শুল্ক রেয়াত সুবিধা দেওয়া হয়নি। ফলে রিকন্ডিশন্ড হাইব্রিড গাড়ির দাম বেশি পড়ছে। বারভিডাকে শুল্ক রেয়াত সুবিধা দিয়ে গাড়ি আমদানির সুযোগ দিলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে, জ্বালানি আমদানিতে ব্যয় করা বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। আর ক্রেতারা সাধারণ গাড়ির দামে উন্নত মানের গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।
চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্ব^র) ছয় হাজার ৭৬৮ ইউনিট রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি হয়েছে। এ থেকে সরকার প্রায় ৮২৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার রাজস্ব পেয়েছে। আগামী অর্থবছরে এ খাত থেকে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার রাজস্ব পাওয়া যাবে।
অবচয় পদ্ধতির অসংগতির কারণে জালিয়াতির সুযোগ তৈরি হতে পারে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, অবচয় সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে বয়স গণনার ক্ষেত্রে চেসিস বুকে উল্লিখিত গাড়ি তৈরির সালের পরবর্তী বছরের প্রথম দিন হতে বয়স গণনা শুরু করা হলে এ অসংগতি দূর হবে।
এছাড়া সিসি সø্যাব ও সম্পূরক শুল্কহার পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব করা হয়। এতে বলা হয়, ১৫০০ সিসি, ১৫০১ থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত করহার বহাল রাখা দরকার। ২০০১ সিসি থেকে ২৭৫০ সিসি পর্যন্ত করহার রয়েছে ৩৬৯.৬৫ শতাংশ। সেখানে করহার ঠিক রেখে ২০০১ সিসি থেকে ৩০০০ সিসি করার প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া ২৭৫১ সিসি থেকে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত করহার ৩৫০ শতাংশ বহাল রেখে ৩০০১ থেকে ৪৬০০ সিসি এবং ৪০০০ সিসির ঊর্ধ্বে ৫০০ শতাংশ করহার বহাল রেখে ৪৬০১ সিসির ঊর্ধ্বে করার প্রস্তাব করা হয়।
Add Comment