হাওরে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট কচুরিপানাই ভরসা

কাজল সরকার, হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের হাওর এলাকায় অকাল বন্যায় বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ায় ধানের সঙ্গে গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত খড়ও নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে জেলায় গো-খাদ্যর সংকট দেখা দিয়েছে। কোনো উপায় না পেয়ে তারা শুধু কচুরিপানা খাইয়ে গরু-বাছুর বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।

জেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, প্রত্যেক বাড়িতেই অস্থায়ী গোয়ালঘর তৈরি করে সেখানে গুরু বেঁধে রেখেছেন কৃষক। গরুর সামনে কচুরিপানা। আবার কয়েকজন গরুর জন্য কচুরিপানা সংগ্রহ করছেন। কেউবা কাঁধভারে সেই কচুরিপানা বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।

কৃষকরা জানান, অকাল বন্যায় হাওরের সব ফসলি জমি তলিয়ে যায়। গো-খাদ্য (খড়) কি করে সংগ্রহ করবেন। আবার কেউ কেউ যদিও খড় সংগ্রহ করেছিলেন, কিন্তু সেগুলো মাসখানেকের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। যারা সামান্য গো-খাদ্যও ঘরে তুলতে পারেননি, তারা বর্ষার শুরুতেই নিজেদের গোয়াল শূন্য করে গরু বিক্রি করে দিয়েছেন। যাদের সামর্থ্য আছে, তারা বাজার থেকে বিভিন্ন ধরনের গো-খাদ্য কিনে আনছেন।

বানিয়াচং উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের কৃষক নেপেন্দ্র সরকার জানান, যে পরিমাণ জমিতে ধান রোপণ করেছিলেন, তাতে সারা বছর গরু খেয়েও অবশিষ্ট থাকত। কিন্তু অকাল বন্যায় সব তলিয়ে যাওয়ায় গরুর খাবার খড় নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বর্ষার শুরু থেকেই কচুরিপানা খাইয়ে গরুগুলো বাঁচিয়ে রেখেছেন।

একই উপজেলার হারুনী গ্রামের কৃষক অর্জুন দাস জানান, এ বছর অকালে বন্যা আসে। তখন নিজের সারা বছরের খাবার ঘরে তুলব, নাকি গরুর খাবার! খাবার না থাকায় গরুগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন।

হাওরে মমতাজ মিয়া নৌকা দিয়ে গরুর জন্য কচুরিপানা সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় তিনি জানান, একেবারেই খড় নেই। পাঁচটি গরু খালি কচুরিপানা আর শাপলা-শালুকের পাতা খাইয়েই রাখতে হচ্ছে।

সুনারু গ্রামের প্রণব দাশ জানান, যাদের টাকা আছে, তারা বাজার থেকে খইল, ভুসি কিনে খাওয়ান। আমাদের সে সামর্থ্য নেই, তাই কচুরিপানা খাইয়ে গরুগুলো বাঁচিয়ে রেখেছি।

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০