নিজস্ব প্রতিবেদক: উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হওয়ায় বিরক্ত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। প্রকল্প বাস্তবায়ন দ্রুত করতে গতি বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন দেরি হলে ব্যয় যেমন বাড়ে, তেমনি জনগণও সঠিক সেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়। একই সঙ্গে হাওর এলাকায় সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে উড়াল সড়ক নির্মাণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, যাতে পানি চলাচল করতে পারে এবং সড়ক টেকসই হয়।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এমন বিরক্তি প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড.শামসুল আলম। এ সময় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মামুন-আল-রশীদসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র জানায়, নেত্রকোনা-বিশিউড়া-ঈশ্বরগঞ্জ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করতে গিয়ে বিরক্ত হন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। কেননা প্রকল্পটি ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু এখন মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। সেইসঙ্গে মূল ব্যয় ছিল ২৬১ কোটি টাকা। এখন সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮১ কোটি ২০ লাখ টাকা। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও জানান, হাওর এলাকায় সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে উড়াল সড়ক নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, যাতে পানি চলাচল করতে পারে এবং সড়ক টেকসই হয়। এককথায় পুলের মতো করে এলিভেটেড সড়ক করতে হবে। সেইসঙ্গে গ্রামাঞ্চলে ব্রিজ ও কালভার্ট এমনভাবে করতে হবে, যাতে নিচ দিয়ে নৌকা চলাচল করতে পারে। এছাড়া ঢাকার আশপাশে সাধারণ মানুষের জন্য বিনোদন কেন্দ্র তৈরিরও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে গাজীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ৯টি জেব্রার মৃত্যুর বিষয়ে তিনি সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। বরিশাল সেনানিবাসের স্থাপনাগুলো নির্মাণে সতর্কতার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, স্থাপনা নির্মাণে খেয়াল রাখতে হবে যাতে জোয়ারের পানি চলাচল করতে পারে। তা না হলে পানি আটকে যেতে পারে। দেশের নদীগুলোতে নিয়মিত ড্রেজিংয়ের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আজ (মঙ্গরবার) ১০টি প্রকল্পের ক্ষেত্রে পাঁচটিই ছিল সংশোধিত প্রকল্প। তার মানে কী? প্রকল্প যথাসময়ে শেষ হচ্ছে না, সংশোধনীর জন্য আসছে। তাই প্রধানমন্ত্রী এমন বিরক্তি প্রকাশ করেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পে অহেতুক বিদেশ সফরের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা আরও বেশি সতর্ক থাকবেন। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবেন। তিনি বলেন, এডিপির বাস্তবায়ন বাড়ছে। আগামীতে আরও বাড়বে।