Print Date & Time : 16 June 2025 Monday 2:46 pm

হাকিমপুরে চাষ হচ্ছে কেনোয়া ও চিয়া সিড

 

প্রতিনিধি, দিনাজপুরঃদিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলিতে প্রথম বারের মতো চিয়া সিড ও কেনোয়া চাষ করা হচ্ছে। নতুন জাতের এ ফসল চাষে কৃষককে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয়  কৃষি বিভাগ।

দিনাজপুর হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজিনা বেগম গতকাল এ  তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানায়, দেশে নতুন ফসল হিসেবে চিয়া সীড ও কেনোয়ার চাষ হলেও ইউরোপ এবং  আমেরিকায় এর বেশ চাহিদা রয়েছে। চিয়া সীড দেখতে সাদা ও কালো রঙের তিলের মতো ছোট হয়ে থাকে।।

দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডাক্তার বোরহানুল কবির সিদ্দিকী জানান,   সুপার ফুড নামে খ্যাত এ শস্যটিতে একই সাথে রয়েছে হাইপ্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল, আয়রন ও এন্টিঅক্সিডেন্ট। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারী। তাই বৈশ্বিক বাজারে এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। দিনাজপুর হাকিমপুর উপজেলায় কৃষি বিভাগের উদ্যোগে স্থানীয় একজন কৃষক চিয়া সীড চাষ করে বাজারজাত করার প্রক্রীয়া নেওয়ায় তিনি এ ধরনের সাহসী উদ্বেগ নেয়ায় তাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ডায়াবেটিক ও হƒদরোগে আক্রান্ত রোগীদের এখন চিকিৎসকরা চিয়া সীড সেবনের  পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু এ খাদ্যটি দেশের বাজারে বিক্রি হয় বাইরে থেকে আমদানি করে এনে। এখন দেশের সর্বোচ্চ এ খাদ্যটির চাহিদা বেড়ে গেছে। এজন্য দেশে কৃষি বিভাগ পরিকল্পনা মাফিক চিয়া সীড চাষ করে সফলভাবে উৎপাদন করতে পারলে ক্রয় ক্ষমতা প্রত্যেকের হাতের নাগালে থাকবে। এ  খাদ্যটি সেবনে সব ধরনের মানুষ স্বাস্থ্য সম্মত জীবন যাপন করতে সক্ষম হবে।

দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান মিয়া জানান, তিনি সম্পতি জেলার হাকিমপুর উপজেলার হিলিতে শামিম খান নামের এক কৃষকের চিয়া সীড চষে করে ফসল দেখেছেন। ওই কৃষকের উৎপাদিত চিয়া সীড এখন পর্যন্ত ভালো রয়েছে। তিনি নিজে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন। চিয়া সীড সফলভাবে চাষ করা সম্ভব বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন,   কম খরচে মাত্র ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে এ ফসল ঘরে তোলা সম্ভব। এছাড়া অন্যন্য ফসলের তুলনায় সময়ও কম লাগে। বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকায় এ ফসল বিক্রি করতে কৃষকের কোন সমস্যা হবে না। আরো ব্যাপক ভাবে এ ফসল চাষ করার পরিকল্পনা কৃষি বিভাগে রয়েছে।

জেলার হাকিমপুর উপজেলার হিলি এলাকার কৃষক শামিম খান এর সাথে কথা জানা যায়, তিনি  ৪২ শতক জমিতে পরীক্ষা মূলক ভাবে চিয়া সীড ও কেনোয়ার আবাদ করেছেন। ফসল বাড়াতে জৈব সার, ইউরিয়াসহ ভিটামিন সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন। এ পযন্ত  খরচ হয়েছে  ১০ হাজার টাকা। আর বিক্রির আশা রয়েছে ৫০ হাজার টাকা। প্রথম পর্যায়ে  পাইকারিতে কিছু চিয়া সীড  ৬০০  টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন । তার জমিতে যে পরিমাণ চিয়া সীড হয়েছে তা ক্রয়ের জন্য অনেক ব্যবসায়ী এগিয়ে আসছেন। তিনি সফলভাবে এ চাষ করে উৎসব বোধ করছেন।

দিনাজপুরের হাকিমপুরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, প্রথমবারের মতো এখানকার ওই কৃষক ফসলটি চাষ করছেন। তাদের কীটনাশক, সার প্রয়োগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরাশর্শ দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে। আরো কয়েকজন কৃষক এ ফসল চাষে কৃষি বিভাগ পরামর্শ নিয়েছেন। তারা চিয়া সীড চাষ করবেন বলে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।