নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত হাক্কানী পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলসের উদ্যোক্তা পরিচালক ও এমডি গোলাম মোস্তফার মালিকানাধীন হাক্কানী করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটি প্রিমিয়ার ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ঋণ নেয়। কিন্তু গত এক বছর ধরে ঋণের টাকা শোধ করছে না। বর্তমানে হাক্কানী করপোরেশনের কাছে ১৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা খেলাপি পরিমাণ হয়েছে। আর এসব খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বন্ধকিতে থাকা পাঁচলাইশ থানার বাকলিয়া মৌজায় ২১ শতাংশ জমি নিলামে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রিমিয়ার ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামভিক্তিক হাক্কানী গ্রুপের চেয়ারম্যান হাজি মোহাম্মদ আবদুল্লাহর ছেলে গোলাম মোস্তফা মালিকানাধীন হাক্কানী করপোরেশন। গোলাম মোস্তফা প্রিমিয়ার ব্যাংক থেকে ঋণ নেন। চলতি বছরের ২২ জুন পর্যন্ত হাক্কানী করপোরেশনের কাছে ১৫ কোটি ৬৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা খেলাপি পাওনা হয়েছে। ওই খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বন্ধকি জমি নিলামে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। এ জমিটি আগামী ২১ জুলাই আগ্রাবাদ ও হেড অফিসে নিলামে বিক্রয় হবে। আরও জানা যায়, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা এলাকায় হাক্কানী করপোরেশন সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভাগের অনুমতি ছাড়া, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মুরগি ও মাছের খাদ্য উৎপাদন করায় বেশ কয়েকবার জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি অস্বাস্থ্যকর ও অনিরাপদ পরিবেশে তৈরি করা এসব খাদ্য মাছ ও প্রাণীকে খাওয়ানো হলে স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্ভাবনাও আছে। শুধু তাই নয়, লোকালয়ে এভাবে খাদ্য উৎপাদনের ফলে আশপাশে দুর্গন্ধ ছড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে জরিমানা করা হয়।
এ বিষয়ে প্রিমিয়ার ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার একাধিক কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে বলেন, গোলাম মোস্তফা মালিকানাধীন হাক্কানী করপোরেশন আমাদের শাখা থেকে ঋণ সুবিধা নেয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির কাছে সুদাসলে ১৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা খেলাপি পাওনা রয়েছে। আর এসব খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বন্ধকিতে থাকা পাঁচলাইশ থানার বাকলিয়া মৌজায় ২১ শতাংশ জমি নিলামে বিক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। যদিও ক্রেতা পাওয়া যায়, তাহলে ঋণের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। তা না হলে আমরা অর্থঋণ আদালতে মামলা করব। এছাড়া গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে চেক প্রত্যাখ্যানে মামলাও চলমান রয়েছে।
অপরদিকে হাক্কানী করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী গোলাম মোস্তফার বক্তব্য জানতে তার ব্যবসায়িক অফিসে যোগাযোগ করা হলে অফিস থেকে জানানো হয় মালিক পক্ষের কেউ অফিসে নেই। পরে তার ফোন নাম্বার চাওয়া হলে তারা নাম্বার দিতে অপারগতা প্রকাশ করে।
উল্লেখ, ‘২০০১ সালে পেপার খাতের কোম্পানি হাক্কানী পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলস লিমিটেড পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত হয়। বি ক্যাটেগরিতে থাকা প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন ১৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের ৪৭ দশমিক ৮০ শতাংশ, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ৪৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে তিন দশমিক ৩৮ শতাংশ শেয়ার মালিকানা রয়েছে।’