সেন্টমার্টিন দ্বীপ

হাজার কেজি আবর্জনা অপসারণ করল কোকা-কোলা ও কেওক্রাডং

সমুদ্র ও জলপথকে পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত রাখতে বিশ্বব্যাপী কাজ করছে কোকা-কোলা। এরই ধারাবাহিকতায় নবম বারের মতো সেন্টমার্টিন সমুদ্রসৈকতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও গণসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে কোকা-কোলা বাংলাদেশ ও কেওক্রাডং বাংলাদেশ। ২০৩০ সালের মধ্যে কোকা-কোলার ‘বর্জ্যমুক্ত বিশ্ব’ প্রতিষ্ঠার বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে এ আয়োজন করা হয়েছে। এবারের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেওয়া নানা শ্রেণি-পেশার ৫৫০ স্বেচ্ছাসেবী সেন্টমার্টিন সমুদ্রসৈকত থেকে প্রায় এক হাজার কেজি আবর্জনা অপসারণ করেছে।

বিশ্বব্যাপী পার্টনারশিপের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে ‘ওশান কনজারভেন্সি’র কান্ট্রি কো-অরডিনেটর কেওক্রাডং বাংলাদেশ-এর সঙ্গে আট বছর ধরে যৌথভাবে এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে কোকা-কোলা বাংলাদেশ। এ সময়ের মধ্যে সেন্টমার্টিন কোরাল দ্বীপ থেকে তারা প্রায় ৯ হাজার ৫০০ কেজি সামুদ্রিক আবর্জনা পরিষ্কার করেছে, এতে সারা দেশের প্রায় তিন হাজার ৭০০ স্বেচ্ছাসেবী অংশ নিয়েছেন।

৩৩তম ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপ উপলক্ষে এ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ‘পিক ইট আপ, ক্লিন ইট আপ, সি চেঞ্জ’ স্লোগানকে সামনে এ আয়োজনে দেশের বিভিন্ন স্থানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ নানা পেশাজীবীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। সমুদ্রের পানি দূষণমুক্ত করার জন্য সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন ও যত্রতত্র আবর্জনা না ফেলাসহ পরিবেশের নানা বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার মাধ্যমে সমুদ্রদূষণ রোধে কাজ করা এ কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য।

আয়োজনের প্রথম দিনে স্বেচ্ছাসেবীরা ছোট দলে ভাগ হয়ে আবর্জনা সংগ্রহ করে একটি নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো করেন। স্বেচ্ছাসেবীদের মূল লক্ষ্য ছিল অপচনশীল আবর্জনা সংগ্রহ করা, যার মধ্যে রয়েছে সিগারেটের ফিল্টার, চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক প্রভৃতি। সংগৃহীত আবর্জনার তথ্য ওশান কনজারভেন্সির ট্র্যাশ ডেটাবেসে আপলোড করা হয়েছে।

পরদিন স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান, কোস্টগার্ড কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন নিয়াজ আহমেদ ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ওয়াকার আহমেদ অংশ নেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফেলে দেওয়া আর্বজনাই সমুদ্রদূষণের প্রধান কারণ। তাই স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকসহ জনসাধারণকে সচেতন করে এ দূষণ রোধ করা সম্ভব। এজন্য এ কার্যক্রমে স্থানীয়দের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পাশাপাশি অন্য স্বেচ্ছাসেবীরাও তাদের পরিচিতদের কাছে সমুদ্রদূষণের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবেন বলে আশাবাদী আয়োজকরা।

কোকা-কোলার ‘বর্জ্যমুক্ত বিশ্ব’র অঙ্গীকার এবং এ কার্যক্রমের জন্য বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন দ্বীপকে নির্বাচন করা প্রসঙ্গে

কোকা-কোলা বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার অজয় বাতিজা বলেন, সেন্টমার্টিনের সৌন্দর্য অতুলনীয়। এজন্য এখানে অনেক পর্যটক বেড়াতে আসেন, ফলে অনেক সময় এখানকার সংবেদনশীল ইকো-সিস্টেমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই এবারও পর্যটক, স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে আমরা ‘কোস্টাল ক্লিনআপ’ কার্যক্রম পরিচালনা করছি।

কোকা-কোলা বাংলাদেশ

কোকা-কোলার পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে কোকা-কোলা, ডায়েট কোক, স্প্রাইট, ফান্টা, কিনলে সোডা, কোক জিরো, স্প্রাইট জিরো, কারেন্ট প্রভৃতি। প্রতিষ্ঠানটির দুটি উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি হলো ‘এভরি ড্রপ ম্যাটারস’ ও ‘ওয়াশ’। এর আওতায় দেশব্যাপী বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, পয়োনিষ্কাশন, স্বাস্থ্যবিধি বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং বিদ্যালয়ে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

ওশান কনজারভেন্সি

ওশান কনজারভেন্সি সমুদ্রের নানা বিষয়ের ওপর শিক্ষাদান করে, যাতে সাধারণ মানুষ সমুদ্র রক্ষায় এগিয়ে আসে। আর্কটিক থেকে শুরু করে মেক্সিকো উপসাগর পর্যন্ত সমুদ্রের যাবতীয় সমস্যা সমাধানে সব শ্রেণির মানুষকে একত্রিত করছে ওশান কনজারভেন্সি। সমুদ্র ও এর প্রাণিকুল রক্ষায় সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি এ-বিষয়ক প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দানে কাজ করছে ওশান কনজারভেন্সি।

কেওক্রাডং বাংলাদেশ

বাংলাদেশের সামুদ্রিক আবর্জনা ও ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করে কেওক্রাডং বাংলাদেশ। সংগঠনটি ২০০৬ সাল থেকে ওশান কনজারভেন্সির কান্ট্রি কো-অরডিনেটর হিসেবে কোস্টাল ক্লিনআপকে উপস্থাপন করছে। তারা সাধারণ সামুদ্রিক আবর্জনার প্রভাব ও পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে কাজ করছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০