হাজীগঞ্জে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

বেলায়েত সুমন, চাঁদপুর: চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, চলতি বছর ২৪ সেপ্টেম্বর ও ১২ অক্টোবর পরপর দুইবার হাজীগঞ্জের ৯নং গন্ধব্যপুর ইউনিয়নের মালীগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আয়া পদে কর্মচারী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আয়াসহ ২০ জন

জেএসসি/জেডিসি সমমান শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রার্থী ৫০০ টাকা করে ব্যাংক ড্রাফটসহ চাকরির জন্য আবেদন করেন। মালীগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষপর্যায়ে হওয়ায় তড়িঘড়ি করে সব পদে আবেদনকারীদের কাছে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নোটিস দেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি।

এদিকে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ১৬ জন প্রার্থীর অংশ লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়। পরীক্ষার্থীদের ফল সন্তোষজনক না হওয়ায় দিন শেষে নিয়োগ স্থগিত করে দেয়া হয়। এরপর পুনরায় জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১২ অক্টোবর সকাল ১০টায় নতুন পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করা হয়। নির্ধারিত তারিখে অত্যন্ত গোপনে বিদ্যালয়ে লোক দেখানো নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। ওই দিন সকাল ১০টায় চাকরিপ্রার্থীরা স্কুলে উপস্থিত হয়ে জানতে পারেন নিয়োগ পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই তিন পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এ সময় প্রধান শিক্ষক প্রার্থীদের অনুরোধ করেন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য। এরপর ১৪ জন পরীক্ষার্থী নিয়ে পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষার মাঝামাঝিতে নুর হোসেন নামের এক পরীক্ষার্থী হাতেনাতে নকলসহ ধরা পড়েন। তার চারটি প্রশ্নের মধ্যে তিনটি প্রশ্ন মিলে যায়। সব পরীক্ষার্থীর চাপে নুর হোসেন বলেন, এ প্রশ্ন তাকে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি দিয়েছেন এবং তাকে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর পদে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দিয়ে তার কাছ থেকে নগদ ১,৫০,০০০/- (এক লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা অগ্রিম নিয়েছেন।

নিয়োগ-সংক্রান্ত এ অনিয়মের খবরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও এলাকাবাসীর মধ্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সেখানে তিনটি পদের মধ্যে অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতা কর্মী এ দুটি পদ বিধি মোতাবেক ৯ জনের উপস্থিতি স্বাক্ষর দেখিয়ে চূড়ান্ত করেন নিয়োগ কমিটি। অনিয়মের অভিযোগ ওঠে ওই নিয়োগ কমিটির বিরুদ্ধেও।

কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী জানিয়েছেন, সুষ্ঠুভাবে নিয়োগ পরীক্ষা হয়নি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি মিলে অগ্রিম প্রায় ৯ লাখ টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের তিন পদে নিয়োগ দিয়ে নিজেরা বাণিজ্য করেছেন।

বিদ্যালয়ের আরেক সদস্য হাবিবুর রহমান বাবলু বলেন, পরীক্ষার দিন গিয়ে দেখি বিদ্যালয়ের সভাপতি কাউছার ও প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন তাদের পছন্দের দুই প্রার্থীর খাতায় নিজেরা লিখে দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে  হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার শেয়ার বিজকে বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার সত্যতা পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মালীগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহাদাত হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষপর্যায়ে। তাই সভাপতির অনুরোধে দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।

অনিয়মের কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, যারা নিয়োগ পেয়েছেন তা বিধি অনুযায়ী কার্যকর করা হয়েছে। আর কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নই বলে তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০