নিজস্ব প্রতিবেদক: বড় ছেলে এরফান সেলিমের কার্যক্রমে বিপাকে পড়া সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের এক যুগ আগের একটি মামলার নথি তলব করেছেন হাইকোর্ট। দুদকের ওই মামলায় বিচারিক আদালতে তার ১৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ হয়েছিল।
আগামী ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ কে ওই মামলার এলসিআর উচ্চ আদালতে পাঠাতে বলা হয়েছে। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাজী সেলিমের আপিল দ্রুত শুনানি করতে দুর্নীতি দমন কমিশন একটি আবেদন করেছিল।
সেই আবেদনে বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। হাজী সেলিমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা।
খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘আগামী ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে নি¤œ আদালতের রেকর্ড আনার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নথি আসার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
হাজী সেলিমের আইনজীবী রাজা বলেন, ‘২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাজী সেলিমের আপিল গ্রহণ করে হাইকোর্ট তাকে খালাস দেন। পরে ওই বছরের ৩ আগস্ট এই মামলার রেকর্ড নি¤œ আদালতে চলে যায়। এরপর এই রেকর্ড আর আসেনি। আজকে হাইকোর্ট নি¤œ আদালতকে বলেছেন, রেকর্ডটা পাঠাতে অথবা এ-সম্পর্কিত রিপোর্ট দিতে। এখন রেকর্ড এলে পেপারবুক তৈরি হওয়ার পর শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হবে।’
গত রোববার দুদক এ মামলাটি পরিচালনার জন্য খুরশীদ আলম খানকে নিয়োগ দেয়। এরপর গত সোমবার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় বিচারিক আদালতের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে হাজী মোহাম্মদ সেলিমের আপিল কার্যতালিকাভুক্ত করতে আবেদন করে দুদক।
মঙ্গলবার দুদকের পক্ষ থেকে আবার সেটি উপস্থাপন করা হলে হাইকোর্ট নি¤œ আদালতের নথি তলব করেন।
নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের মামলায় হাজী সেলিমের ছেলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান সেলিম গ্রেপ্তার এবং পুরান ঢাকায় ক্ষমতাসীন দলের এই সংসদ সদস্যের বাড়িতে র্যাবের অভিযান নিয়ে আলোচনার মধ্যে দুদক মামলাটি নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ নিল।
জরুরি অবস্থার সময় ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল রায়ে বিচারিক আদালত ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন তাকে।
পরে ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর হাজী সেলিম এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট ১৩ বছরের সাজা বাতিল করে রায় দেন।
হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল হয়ে যায়। সেইসঙ্গে হাজী সেলিমের আপিল আবার হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
সে নির্দেশনার আলোকেই সোমবার দুদক হাজী সেলিমের আপিল দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন করে।