প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ: পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঝিনাইদহে বিক্রির জন্য হাটে তোলা শুরু হয়েছে কোরবানির পশু। তবে এখনও জমে ওঠেনি বেচাকেনা। শেষ মুহূর্তে তীব্র গরমে গরুর হজম সমস্যা ও হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে খাবারের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতার পরামর্শ দিয়েছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলা সদরের সার্কিট হাউস পাড়া, ধানহাড়িয়া, হাটগোপালপুর, শৈলকুপা, হরিণাকুণ্ডুসহ অন্যান্য উপজেলায় এবার কোরবানির জন্য মাঝারি ও ছোট সাইজের গরু বেশি পালন করা হয়েছে। তবে গরু পালনে খরচ বেশি হয়েছে বলে জানান খামারিরা।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছর জেলায় ২৩ হাজার ১২৬টি খামারে এক লাখ ১১ হাজার ৮৪৮টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে, যা গতবছরের তুলনায় ১৪ হাজার ৮৭টি বেশি। তবে এসব খামারের মধ্যে ৯০ শতাংশই পারিবারিক ক্ষুদ্র ও ছোট খামার। জেলায় কোরবানির গরুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৬৬ হাজার। এবার জেলায় ২৬টি পশুহাট বসছে। এর মধ্যে স্থায়ী হাট ২২টি ও অস্থায়ী চারটি।
শহরের সার্কিট হাউস পাড়ার একটি খামারের শ্রমিক আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাদের খামারে ২৫টি গরু আছে, যার মধ্যে ২০টি বিক্রির উপযোগী। একেকটির দাম হবে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা। বাজার ভালো হলে দামও ভালো পাব।’
সদরের ধানহাড়িয়া এলাকার খামারি পিলুয়ার রহমান বলেন, ‘এক বছর আগে খামারে বড় আকারের একটি ও ছোট আকারের একটি গরু পালন করেছিলাম। বাড়িতে দাম বলেছিল, যথাক্রমে দুই লাখ ১০ হাজার ও এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। ভালো লাভের আশায় ঢাকার গাবতলী হাটে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেই গরু বিক্রি করতে হয়েছিল এক লাখ ৭০ ও এক লাখ ১৮ হাজার টাকায়। খরচের টাকাও ওঠেনি। তাই এবার ছোট সাইজের তিনটি গরু পালন করেছি। আশা করছি দাম ভালো হলে লাভ করতে পারব।’
সদর উপজেলার গোয়ালপাড়া, বৈডাঙ্গা পশুহাট ঘুরে দেখা যায়, বাজারে গরুর সরবরাহ তুলনামূলকভাবে কম। ক্রেতাদের বেশিরভাগই আসছেন গরু দেখতে ও বাজার সম্পর্কে ধারণা নিতে। তবে ঈদের এক সপ্তাহ আগে বেচাবিক্রি পুরোদমে জমে উঠবে বলে জানান বিক্রেতারা।
বৈডাঙ্গা হাটে আসা রতনপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ কৌশিক বলেন, ‘ঈদের এখনও বেশ কয়েক দিন বাকি। বাজারে এসে ঘুরে ঘুরে দেখছি কেমন গরু আসছে, দামইবা কেমন। কিনব ঈদের কয়েক দিন আগে।’
গরু বিক্রেতা মিন্টু বলেন, বিক্রির জন্য তিনটি গরু হাটে এনেছি। কিন্তু ক্রেতা খুবই কম। কখন বিক্রি হবে বুঝতে পারছি না।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুব্রত কুমার ব্যানার্জী বলেন, বর্তমান গরম আবহাওয়া স্বাস্থ্যবান গরুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। দানাদার খাবার বেশি দিলে হজমে সমস্যা হতে পারে। হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। তাই খুবই সতর্কতার সঙ্গে কাঁচা ঘাস, তরল ও আঁশজাতীয় খাবার দিতে হবে। যতটা সম্ভব দানাদার খাবার এড়িয়ে যেতে হবে।