হাবিপ্রবিতে সাপের আনাগোনা শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা

মো. রুবাইয়াদ ইসলাম, হাবিপ্রবি (দিনাজপুর): হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে কিছুদিন পরপর ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির সাপের দেখা মিলছে। এর মধ্যে সব থেকে বেশি বিষধর ‘শঙ্খিনী’ সাপের আনাগোনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

শঙ্খিনী সাপ কেউটে এবং শাখামুটি নামেও পরিচিত। গ্রামের মানুষের কাছে এটি দুমুখো সাপ হিসেবেও পরিচিত। সাপটি খুব বিষধর হলেও মানুষের জন্য মোটেও ক্ষতিকর নয়। এটি সাধারণত রাসেল ভাইপার, গোখরার মতো বিষধর সাপদের খেয়ে ফেলে, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। আমাদের দেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত এ সাপের কামড়ে কোনো মানুষের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। সাপটি যে এলাকায় বসবাস করে সেখানে কোনো বিষধর সাপ থাকে না। প্রকৃতি সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘আইইউসিএন’ এটিকে বাংলাদেশে বিপন্ন এবং বিশ্বে বিপদমুক্ত বলে বিবেচনা করে থাকে। এছাড়া বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজিয়া জামান বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলাচল করার সময় প্রায়ই সাপের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ নিয়ে আমরা সবাই আতঙ্কে আছি?। সাপগুলো এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো ক্ষতি না করে থাকলেও, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রæত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ইয়াছিন প্রধান বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতরে সাপের আনাগোনার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচিসহ কেন্দ্রীয় খামার থেকে সাপগুলোর ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের জেনারেল এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. উম্মে সালমা বলেন, আমিও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোয়ার্টারে থাকি এবং সেখানেও সম্প্রতি বেশ কয়েকবার সাপের দেখা মিলেছে। এর ফলে বেশ আতঙ্কিত অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে। শঙ্খিনী সাপের বিষয়ে তিনি বলেন, এই সাপটি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী বিপন্ন প্রাণীগুলোর একটি। সাপটি যেমন পরিবেশ রক্ষার জন্য জরুরি তেমনি সাপের বিষ জীবনরক্ষাকারী ওষুধ তৈরিতেও প্রয়োজন।

তিনি আরও জানান, সাপ বিষয়ে জ্ঞান গবেষণা আমাদের অনুষদের একটি কার্যক্রম। আমার অনুষদের ডিন স্যারের সঙ্গে আলোচনা করে খুব দ্রæত ক্যাম্পাসের সাপগুলো সংরক্ষণ করা এবং গবেষণায় কাজে লাগানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে চাই। এ সময় তিনি ক্যাম্পাসে অবস্থানরত সবাইকে সাবধানে চলাফেরা করার এবং ঝোপঝাড় এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শঙ্খিনী সাপ ছাড়াও অন্যান্য বিষধর সাপের আনাগোনার খবর পাওয়া গেছে। তবে মেডিকেল সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাপের বিষের কোনো প্রতিকারক ওষুধ মজুত নেই তাদের কাছে। এতে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। তবে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্স সেবার ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার কর্তৃপক্ষ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০