Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 5:54 pm

হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ: খালেদা জিয়া

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। হামলায় মির্জা ফখরুলসহ দলটির কয়েকজন নেতা আহত হয়েছেন। রাঙামাটিতে পাহাড়ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার পথে গতকাল সকালে চট্টগ্রামে এ হামলা হয়। হামলার পর তারা রাঙামাটি না গিয়ে চট্টগ্রাম শহরে ফিরে আসেন। হামলার নিন্দা জানিয়ে আজ প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বিএনপি। আর আওয়ামী লীগ এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সদরের ইছাখালী এলাকায় এ হামলা হয় বলে জানা গেছে। গাড়িবহরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আমিন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সদস্য মাহবুবুর রহমান প্রমুখ ছিলেন। তারা আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

হামলার পর রাঙামাটিতে না গিয়ে চট্টগ্রাম শহরে ফিরে আসেন বিএনপি নেতারা। দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে পৌঁছে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এ আঘাত গণতন্ত্রের প্রতি আঘাত। যারা মুক্তচিন্তার কথা বলে, এ সরকারের খারাপ কাজগুলোর বিরোধিতা করে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চারÑতাদের প্রতি এ আঘাত। যারা জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন, এ আঘাত তাদের প্রতি।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের চরিত্র আবার উদ্ঘাটিত হয়েছে। সব সময় মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে এলেও তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। ভিন্নমতেও তারা বিশ্বাস করে না। সহনশীলতা বলতে তাদের মধ্যে কিছু নেই। তিনি বলেন, আমরা তো সেখানে কোনো জনসভা করতে যাইনি। আমাদের দলের সভাও করতে যাইনি। যারা নিহত হয়েছেন সেসব পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে যাচ্ছিলাম।

এ হামলা ‘অবিশ্বাস্য’ মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের অবস্থা যদি এ হয়, সাধারণ মানুষের অবস্থা কী? আমি মনে করি, এ আক্রমণ গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ। সুস্থ চিন্তার মানুষের প্রতি আক্রমণ।’

তিনি বলেন, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে ‘এ ফ্যাসিস্ট সরকারকে’ পরাজিত করতে পারলেই এর প্রতিবাদ হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘একদিকে দেশ ও জাতির সমস্ত রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। অন্যদিকে দুর্গত মানুষের পাশেও আমরা দাঁড়াতে পারব না। আপনি এখন ত্রাণও দিতে পারবেন না। একটি দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ মহাসচিবের ওপর এ আক্রমণ। এরপর আর বাকি থাকল কী? এরপর কি আর কোনো রাজনীতি থাকে? এরপর তারা কী চায়?’

মির্জা ফখরুল বলেন, পাহাড়ে এত প্রাণহানির পর সরকারের উচিত ছিল রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা। জনগণের প্রতি তাদের কোনো মায়া-মমতা-দরদ নেই। পাহাড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দলের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা পরে পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চেয়ারপারসনের নির্দেশে সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল রাঙামাটির উদ্দেশে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসি। বিমানবন্দর থেকে আমরা রাঙামাটির উদ্দেশে রওনা হই। পথিমধ্যে জানতে পারি সড়কে যে অংশ ভাঙন আছে, সেখান দিয়ে যাওয়া সম্ভব না। তাই কাপ্তাই গিয়ে সেখান থেকে নদীপথে রাঙামাটি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের গাড়িবহর রাঙ্গুনিয়া থানা অতিক্রম করে ইছাখালী বাজারে পৌঁছায়। সেখানে তখন প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। এ সময় ৩০-৪০ জন যুবক লাঠি, হকিস্টিক ও পাথর নিয়ে হামলা চালায়। গাড়ির সামনের কাচ একটি বড় পাথর দিয়ে ভেঙে ফেলে। তারপর হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করতে থাকে।’

হামলায় পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়। আহতরা হলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান রুহুল আলম চৌধুরী, মাহবুবুবর রহমান শামীম ও ছাত্রদল নেতা গোলাম নবী।

উল্লেখ্য, রাঙামাটির দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে বিএনপি প্রতিনিধিদলের সদস্যরা সকালে চট্টগ্রাম থেকে সড়ক পথে কাপ্তাইয়ের পথে রওনা হন। সেখান থেকে নৌপথে তাদের রাঙামাটি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইছাখালী এলাকায় একদল লোক রড ও দা নিয়ে ওই গাড়িবহরে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে বলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান।

তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদের লোকজনকে এ হামলার জন্য দায়ী করেন। অন্যদিকে হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি নেতাদের গাড়ির ধাক্কায় দুইজন আহত হওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ: খালেদা জিয়া

রাঙামাটি যাওয়ার পথে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ওপর আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ অভিযোগ করেন।

বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন অভিযোগ করেন, রাঙ্গুনিয়ায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলায় বিএনপি মহাসচিবসহ বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের গাড়িবহরে হামলা গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলতে সরকারের একটি দুর্বিনীত উদ্যোগ। এ ঘটনা বর্তমান বিনা ভোটের সরকারের আরেকটি হিংসাশ্রয়ী অসুস্থ রাজনীতিরই বহিঃপ্রকাশ।

খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গুণ্ডামিকেই অবলম্বন হিসেবে নিয়েছে। তাই শান্তি, স্বস্তি ও জননিরাপত্তাকে বিসর্জন দিয়ে নৈরাজ্যকেই বেছে নিয়েছে। এভাবে ভয়ভীতি, শঙ্কা ও আতঙ্কের পরিবেশ বজায় রেখে গণপ্রতিবাদকে চাপা দিয়ে রাখাটাই তাদের মূল লক্ষ্য। তাই জনসমাজে সন্ত্রাসীদের শাসনই সর্বত্র বিরাজমান।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিবের গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে নেতাদের আহত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান খালেদা জিয়া। অবিলম্বে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

বিক্ষোভ মিছিল আজ: মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল দুপুরে কুমিল্লায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন রিজভী। নগরের কান্দিরপাড়ে অবস্থিত কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

রিজভী বলেন, হামলার প্রতিবাদে কাল সোমবার দেশের সব জেলা সদর, মহানগর ও রাজধানীর থানায় থানায় বিক্ষোভ মিছিল করা হবে। রিজভী অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে। রাঙ্গুনিয়ার হামলা গণতন্ত্রের ওপর হামলা।

 

 

 

মন্দা বাজারে বেড়ে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সংশয় বিরাজ করছে। তাদের মতে, একটি কোম্পানির শেয়ারদর তখই বাড়ে যখন ওই কোম্পানি সম্পর্কে কোনো ভালো খবর পাওয়া যায়। তবে সাভার রিফ্র্যাক্টরিজের বিষয়ে কোনো সুখবর নেই। তাছাড়া পুঞ্জীভূত লোকসানে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ অবস্থায় কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ার পেছনে কোনো চক্র কাজ করছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতি বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানান তারা।

এদিকে কোম্পানির লভ্যাংশের ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে কোম্পানিটির লভ্যাংশ দেওয়ার কোনো ইতিহাস ডিএসইতে নেই।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীদের অভাব রয়েছে। যারা আছে তারা স্বল্প সময়ের মধ্যে মুনাফা তুলতে চেষ্টা করে। আর তাদের এ চেষ্টাকে পুঁজি করে অসৎ চক্র কোনো না কোনো কোম্পানির শেয়ারের পেছনে দর বাড়াতে কাজ করে। এর মধ্যে স্বল্প মূলধনি কোম্পানিকে নিয়ে মেতে উঠছে তারা। সাভার রিফ্র্যাক্টরিজও স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি। এ কোম্পানির শেয়ারদরে উল্লম্ফন দেখে সংশয় হয়ে পড়াটা স্বাভাবিক। তবে কেন দর বাড়ছে, তা বিএসইর খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করছেন তারা।

পুঁজিবাজারে ১৯৮৮ সালে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন এক কোটি ৩৯ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারসংখ্যা ১৩ লাখ ৯২ হাজার ৮০০টি। এর মধ্যে পরিচালকদের কাছে ৫০ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪২ দশমিক ১৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।