Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 7:33 pm

হামুন তাণ্ডবে এখন ও বিদ্যুতের আলো পায়নি মহেশখালী

প্রতিনিধি, কক্সবাজার: বছর বছর ধরে মাথা উঁচু করে থাকা পুরোনো সে গাছগুলোরও দেখা মিলছে না দ্বীপের কোথাও। ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর সব এলাকা। ক্ষতি হয়েছে মানুষের কোটি টাকার সম্পদ। বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গেছে। টানা আঁধারে প্রায় ৭৫ ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে এ দ্বীপের মানুষের। কখন বিদ্যুৎ আসবে সেই নিশ্চয়তাও দিতে পারছে না পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নের প্রত্যেক বাড়িতেই ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে তীব্র ও মাঝারি ধরনের ক্ষতি হয়েছে। বছর বছর ধরে মাথা উঁচু করে থাকা পুরোনো সে গাছগুলোরও দেখা মিলছে না কোথাও। প্রায় সব গাছই উপড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড়ের রাতে। অপরদিকে কৃষকের পানের বরজ, ফলদ বাগান, ধানের ক্ষেত, খামার, সবজি ক্ষেত ও চাষের ক্ষতি হয়েছে বেশি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এত বেশি যে, এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে ক্ষতির হিসাব নিরূপণ করা হয়নি। হিসাবের কাজ চলমান জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। তবে প্রাথমিকভাবে মহেশখালীতে আনুমানিক ২০-২২ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

ফকিরাঘোনা গ্রামের মিজান, রাহমত, আবদুল গনী বলেন, ‘তুফান হবে তা কেউ ভাবেনি। ৭ নম্বর বিপদ সংকেত থাকা অবস্থায় হঠাৎ করে ঝড়ের তাণ্ডব শুরু হয়। এতে ঘরবাড়ির পাশাপাশি পুরো সুপারি বাগান ভেঙে গেছে। কালারমারছড়ার শাহেদ, আসিফ ও শামশু জানান, তাদের খামারবাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। পেঁপে বাগান ও সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। ব্যাংকঋণ নিয়েই তারা এই খামারবাড়ি করেছে।

ছোট মহেশখালী, শাপলাপুরের পানচাষি হাছান আলী ও মনজুর আলম বলেন, ‘সমিতি থেকে ধার নিয়ে পানের বরজ করেছি। পান তোলার উপযোগী হওয়ার আগেই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে পানের বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। এ রকম অনেক কৃষকের পানের বরজ নষ্ট হয়ে গেছে।

এদিকে টানা বিদ্যুৎ না থাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। মহেশখালী পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৩৩ কেভি খুঁটি ভেঙেছে ২৩টি, এইচটি খুটি ভেঙেছে ৪৫টি, এলটি খুটি ভেঙেছে ৩৫টি, ক্রস আর্ম ভেঙেছে ৬৭টি, ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে ৫৭টি, তার ছিঁড়ে গেছে ৩৪৫টি, গাছ পড়েছে এক হাজার দুটি স্পটে এবং মিটার ভেঙেছে এক হাজার ৬০০টি।

মহেশখালী জোনাল অফিসের ডিজিএম বলেন, মেরামত করে পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে দুই মাসের মতো সময় লাগতে পারে। তবে দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে অসংখ্য ক্ষতি হয়েছে। এরই মধ্যে মন্ত্রী মহোদয় পরিদর্শন করে ত্রাণ বিতরণ করে গেছেন। চেষ্টা করা হচ্ছে আরও সহায়তা আনার।’