প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বুধবার আকস্মিক পরিদর্শনে আসেন খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মঞ্জুর মোরশেদ। এসময় অফিস টাইমে হাসপাতালের দায়িত্বরত ডাক্তার ও স্টাফদের না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে সরকারি এ হাসপাতালের হাজিরা খাতা নিয়ে যান তিনি।
জানা যায়, সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে তিনি কালীগঞ্জের সরকারি এ হাসপাতালটিতে প্রবেশ করেন। প্রথমে তিনি হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলমগীর হোসেনের কক্ষে গিয়ে তাকে পাননি। তারপর তিনি পুরো হাসপাতাল ঘুরে দেখেন। হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডের নোংরা পরিবেশ দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
নার্সদের ডিউটি রুমে গিয়ে হাজিরা খাতা দেখেন এবং ভর্তি রোগীদের সেবা প্রদানের ব্যাপারে খোঁজ নেন। নার্সদের কাছ থেকে জানতে চান রোগীদের খাবারের মান এবং ডেলিভারি রোগীর সংখ্যা সম্পর্কে। পরে নার্সদের সঙ্গে নিয়ে লেবাররুমও তিনি ঘুরে দেখেন। তারপর ৯টা ২০ মিনিটেও অনেক ডাক্তার ও স্টাফকে উপস্থিত না হতে দেখে তিনি হাজিরা খাতা নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৮টা থেকে বেলা ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অফিসে প্রবেশের সময়। কিন্তু সকাল ১০টার পরও অনেককে নিজ নিজ ডেস্কে পাওয়া যায় না। এটা এ হাসপাতালের ডাক্তার ও স্টাফদের নিত্যদিনের রুটিনে পরিণত হয়েছে, যা ধরা পড়ে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের আকস্মিক পরিদর্শনে। তিনি এদিন ১৬ ডাক্তার, ৯ অফিস স্টাফ ও ছয় আউটসোর্সিং কর্মীর অফিস টাইমের অনিয়মের ব্যাপারটি হাতেনাতে ধরেন।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলমগীর হোসেন জানান, বিভাগীয় স্যারের পরিদর্শনে আসার কোনো তথ্য আমাদের কাছে আগে থেকে ছিল না। প্রতিষ্ঠান প্রধান হয়েও যথাসময়ে অফিস না করা এবং তার অধীনস্থ ডাক্তার ও স্টাফদের সময়মতো অফিস করাতে ব্যর্থতার ব্যাপারে জানতে চাইলে কৌশলে তিনি তা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, যেহেতু হাসপাতালের রোস্টার অনুযায়ী ডাক্তার ও স্টাফরা ডিউটি করেন, সেহেতু চাইলেও সবাইকে একসঙ্গে পাওয়া যাবে না। এ ব্যাপারটা আমার স্যারেরা দেখছেন, তাই আমি আর কিছু বলতে চাচ্ছি না।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, খুলনা বিভাগীয় পরিচালক স্যার কালীগঞ্জ হাসপাতাল পরিদর্শন করে ঝিনাইদহ আসেন। তিনি কালীগঞ্জ হাসপাতালের সব অনিয়মের বিরুদ্ধে কড়া হুশিয়ারি দিয়ে নানা নির্দেশনা প্রদান করেন।
অফিস স্টাফদের যারা যথাসময়ে উপস্থিত ছিলেন না, তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। আর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ যেসব ডাক্তার সময়মতো অফিস করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন, তাদের ব্যাপারে বিভাগীয় পরিচালক স্যার নিজেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
