প্রতিনিধি, নওগাঁ: হিজাব নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মানহানির অভিযোগে এবার জেলহাজতে পাঠানো হলো নওগাঁর পোরশা উপজেলার সাংবাদিক সালাউদ্দীন আহম্মেদকে। এ সময় প্রধান শিক্ষিকা আমোদিনী পাল ও শিক্ষক বদিউল আলমকে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন আদালত।
বুধবার নওগাঁ জেলা দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক একেএম মোজাম্মেল হক চৌধুরী তা নাকচ করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। নওগাঁর মহাদেবপুরের দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা আমোদিনী পালের করা মামলায় হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন সালাউদ্দীন আহম্মেদ। এর আগে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন হলেনÑনওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ, দৈনিক নওরোজের মহাদেবপুর উপজেলা প্রতিনিধি কিউএম সাঈদ (৫০) ও মহাদেবপুর দর্পণ নিউজ পোর্টালের প্রতিনিধি সামসুজ্জামান মিলন (৩৮)।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া প্রায় ১৮ শিক্ষার্থীকে স্কুল ড্রেস না পড়ে আসায় শাসন করেন স্কুলটির সহকারী শিক্ষিকা আমোদিনী পাল, যা পরে হিজাব বিতর্কে রূপ নেয়। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সাতটি সুনির্দিষ্ট কারণ ও সুপারিশ উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আমোদিনী পাল হিজাবের কারণে নয়, নির্ধারিত স্কুল ড্রেস না পরার কারণেই শিক্ষার্থীদের মারধর করেছিলেন। একই দিনে বদিউল আলম নামে আরেক শিক্ষকও মারধর করেছিলেন শিক্ষার্থীদের। অথচ প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত শুধু শিক্ষিকা আমোদিনী পালকে শোকজ করেন। এ ঘটনা তদন্ত কমিটির কাছে উদ্দেশ্যমূলক মনে হয়েছে। শুধু শিক্ষিকা আমোদিনী পালকে শোকজ করায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
এ ছাড়া প্রতিবেদনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের প্রহার করায় শিক্ষিকা আমোদিনী পাল ও শিক্ষক বদিউল আলমের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।