Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 2:51 pm

হিলিতে জমে উঠেছে মসলার বাজার

প্রতিনিধি, হিলি (দিনাজপুর): আসন্ন কোরবানির ঈদ ঘিরে দিনাজপুরের হিলিতে জমে উঠেছে মসলার বাজার। বাজারে মসলার দোকানগুলোয় এখন ক্রেতাদের ভিড়। তবে গতবারের তুলনায় এবার মসলার দাম অনেকটাই বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। তিন দিনের ব্যবধানে জিরার দাম বেড়েছে কেজিতে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় পর্যন্ত। দাম বাড়ায় বেচাকেনা কমে গেছে বলে দাবি বিক্রেতাদের। এদিকে আমদানিকারকরা বলছেন, ভারতে মুল্যবৃদ্ধি ও অধিকহারে শুল্কের কারণে জিরার দামটা একটু বাড়ছে। তবে শুল্ক প্রত্যাহার করা হলে জিরার দাম কমতে পারে।

কয়েকজন মসলা বিক্রেতা জানান, দেশের সীমান্তবর্তী ও স্থলবন্দর এলাকা হিলি। তাই এখানকার মসলা দামে কম ও মানে ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মসলা কিনতে আসেন অনেকে। তবে সম্প্রতি এই ঈদে মসলার দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। মসলার ভেতরে সবচেয়ে বেশি মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে জিরার। বিগত দুই মাসের  তুলনায় জিরার দাম বেড়েছে কেজিতে ২০০ টাকা পর্যন্ত। দুই মাস আগে যে জিরা বিক্রি হয়েছিল ৭০০ টাকা কেজি দরে, সেই জিরা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি দরে। অন্যান্য মসলার মধ্যে সাদা এলাচ প্রকারভেদে এক হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা, কালো এলাচ ৯৫০ টাকা থেকে বেড়ে এক হাজার ২০০ টাকা, লং এক হাজার ৪৮০ থেকে এক হাজার

৫৫০ টাকা এবং গোলমরিচ ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা আরও জানান, বন্দর থেকে বেশি দামে মসলা কিনতে হয় বলে তারাও বেশি দামে বিক্রি করছেন। তবে এজন্য আমাদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। কাস্টমারদের সঙ্গে তর্কে-বিতর্কে জড়াতে হচ্ছে তাদের। জিরার দাম বাড়ার কারণে কাস্টমারও অনেক কমে গেছে।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শাহিনুর রেজা শাহিন জানান, মসলার দাম স্বাভাবিক রাখতে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচটি ভারতীয় ট্রাকে জিরা ও মেথি আমদানি হচ্ছে। তবে ঈদের আগে মসলার চাহিদা একটু বেশি থাকে, তাই আমদানি বাড়ানো হয়ে থাকে। তবে বর্তমান ভারতে রপ্তানিতে মুল্যবৃদ্ধি ও জিরার ওপর শুল্কটা বেশি হওয়ার কারণে দাম বাড়ছে। সরকার যদি শুল্ক প্রত্যাহার করে, তাহলে জিরার দাম কমতে পারে।

বাজারে মসলা কিনতে আসা কয়েকজন জানান, হিলি স্থলবন্দরে মসলা দামে কম ও মানে ভালো হওয়ায় আমরা এখান থেকে মসলা কিনে নিয়ে যাই। তবে বর্তমান বাজারে মসলার দাম অনেকটাই বেশি। এত দাম বাড়লে আমরা সামনে কোরবানি ঈদ কীভাবে করব? আমরা চাই প্রশাসন বাজার মনিটরিং করুক, তাহলে একটু কম দামে পাব।

হিলি পানামাপোর্ট লিমিটেড কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাব মল্লিক জানান, ঈদকে সামনে রেখে বর্তমান মসলার আমদানি কিছুটা বেড়েছে। মসলা একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, তাই এটি আমরা দ্রুত ছাড় করার ব্যবস্থা করে থাকি। আমদানি বাড়ার ফলে বন্দরের যেমন দৈনন্দিন আয় বাড়ছে, তেমনি সরকারের রাজস্ব আদায়ও বাড়ছে। 

হিলি কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, স্থলবন্দর দিয়ে গত ১ মে থেকে ২১ জুন পর্যন্ত ভারত থেকে জিরা আমদানি হয়েছে তিন হাজার ৪৪৮ মেট্রিক টন, যা থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ৩৭ কোটি ৫৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।