নিজস্ব প্রতিবেদক: সারা দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ইনস্টিটিউটের নিজস্ব মিলনায়তনে গতকাল দিনব্যাপী সম্মেলনের আয়োজন করে ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘প্রযুক্তিচালিত সমাজব্যবস্থায় ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টিং পেশা’।
হিসাববিজ্ঞানীদের নিয়ে আইসিএমএবি’র এটি ছিল দ্বিতীয় সম্মেলন। ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রথম সম্মেলন। দিনব্যাপী এ সম্মেলনে মোট চারটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইসিএমএবি’র সহসভাপতি ও এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান জামাল আহমেদ চৌধুরী অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান। সংক্ষিপ্ত স্বাগত বক্তব্যে তিনি আমাদের চারপাশ এবং ভবিষ্যতের পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঘটতে থাকা পরিবর্তনের সাপেক্ষে নতুন জ্ঞান আহরণ এবং তার সঙ্গে অভ্যস্ত ও দক্ষ হয়ে ওঠার জন্য এ পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উদ্বুদ্ধ করেন।
আইসিএমএবি’র সভাপতি এম আবুল কালাম মজুমদার এ পেশার বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা এবং চ্যালেঞ্জের বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের ফলে এ পেশার সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছেন তাদেরও নতুন এবং ভিন্ন সেবাদানে সক্ষম হয়ে উঠতে হবে।
১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশে এ পেশার ডিগ্রিধারী পেশাদার এখনও মাত্র চার হাজারের মতোÑ বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি এ পেশার প্রয়োজনীয় লোকবল ও চাহিদার বিষয়টি তুলে ধরেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে এ পেশার শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞরা তাদের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পেশাদার জনগোষ্ঠী গড়ে তোলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আইসিএমএবি’র একাডেমিক অ্যাফেয়ার্সের পরামর্শক ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. নিখিল চন্দ্র শীল উদ্বোধনী সেশনে ‘ইন্ট্রোডিউসিং দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)’ শিরোনামে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। যেখানে তিনি ইনস্টিটিউটের সূচনা, সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। একই সঙ্গে তিনি এ পেশাদারি শিক্ষার কারিকুলামের বিষয়েও ধারণা দেন।
প্রথম টেকনিক্যাল সেশনে রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মাহতাব উদ্দীন আহমেদ ‘ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন: ইজ দ্য অ্যাকাউন্টিং প্রফেশন রেডি’ শিরোনামের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি নিজস্ব উপস্থাপনায় তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তন, আসন্ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে বিভিন্ন পেশায় এর প্রভাব কীভাবে পড়বে তার ধারণা দেন। তিনি সব পেশার মতো অ্যাকাউন্টিং পেশাদার এবং শিক্ষকদেরও এ পরিবর্তনের জন্য প্রস্তত হতে এবং প্রয়োজনীয় নতুন দক্ষতা ও জ্ঞান লাভের তাগিদ দেন।
গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালক (অর্থ) হাসনাইন তৌফিক আহমেদ এ উপস্থাপনার বিষয়ে বক্তব্য দিতে গিয়েও নতুন দক্ষতা এবং জ্ঞানের প্রতি গুরুত্ব দেন।
আইসিএমএবি’র সহসভাপতি, আইডিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আরিফ খানের পরিচালনায় দ্বিতীয় টেকনিক্যাল সেশনে ‘ইমার্জিং করপোরেট রিপোর্টিং ফ্রেমওয়ার্কস’ ও ‘সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্টিং-অ্যালাইনিং উইথ দ্য ২০৩০ এজেন্ডা’ শীর্ষক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ড. ইউসুফ কামাল।
তৃতীয় টেকনিক্যাল সেশনের মূলভাব ছিল ‘করপোরেট গভর্ন্যান্স’ ও আলোচ্য বিষয় ছিল ‘রিসেন্ট ডেভেলপমেন্টস ইন করপোরেট গভর্ন্যান্স’। আইসিএমএবি’র কোষাধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার বালা এ সেশন পরিচালনা করেন।
ডিএসই’র চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার আবদুল মতিন পাটওয়ারী এ সেশনে টেকনিক্যাল পেপার উপস্থাপন করেন। ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার ইলিয়াস আহমেদ মূল প্রবন্ধের ওপর আলোকপাত করেন।
সমাপনী সেশনে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা অ্যাকাউন্টিং পেশা এবং এ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্নোত্তর এবং নিজস্ব মতামত বিনিময় করেন। সেই সঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়।