Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 4:13 pm

হুয়াওয়ের সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০১৮

বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের সবচেয়ে বড় সিএসআর প্রোগ্রাম ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার-২০১৮’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে চীনের বেইজিংয়ে। হুয়াওয়ে কার্যালয়ে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ আইসিটি শিক্ষার্থীকে স্বাগত জানিয়েছে বেইজিং হুয়াওয়ে কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, সিডস ফর দ্য ফিউচার প্রতিযোগিতাটি মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উন্নয়ন পরিকল্পনা কার্যকর করার অংশ, যা ২০০৮ সালে শুরু হয়। বিশ্বের ১০৮টি দেশ ও অঞ্চলে এ প্রতিযোগিতা চালু হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৩৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিন হাজার ৬০০ শিক্ষার্থী চীনের শেনজেনে হুয়াওয়ের হেডকোয়ার্টারে শিক্ষা সফরে গিয়ে হাতে-কলমে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিশ্বমানের প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য নতুন আইসিটি মেধাবীদের দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করা।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই গুলশানে হুয়াওয়ের কাস্টমার সল্যুশন ইনোভেশন অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন এক্সপেরিয়েন্স সেন্টারে (সিএসআইসি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ শীর্ষস্থানীয় পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১০ আইসিটি শিক্ষার্থীকে চূড়ান্ত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের চীনে নিয়ে যাওয়ার আগে ৬ সেপ্টেম্বর সিএসআইসি সেন্টারে আয়োজিত এক গালা অনুষ্ঠানে তাদের সংবর্ধনা দেয় হুয়াওয়ে বাংলাদেশ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিডা চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সব সময় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করে, বিশেষ করে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। ১৯৯৮ সাল থেকে হুয়াওয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। দুই দেশের এই দীর্ঘমেয়াদি সুসম্পর্ক হুয়াওয়ে ও বাংলাদেশ উভয়ের জন্য ফলপ্রসূ। বাংলাদেশের মানুষ যে মেধাবীÑএটা বিশ্বাস করায় আমি অন্তর থেকে হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশ, যেটাকে এখন ‘স্বর্ণের খনি’ বলা যেতে পারে। কারণ বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া ‘ভিশন-২০২১’ বাস্তবায়ন করতে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে, বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পে নতুন প্রজšে§র জন্য নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে। আশা করি দুই দেশের এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিন বজায় থাকবে।
বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মো. মাহফুজুল আলম খান বলেন, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সফলতার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ক্যারিয়ারকে আরও সামনে এগিয়ে নিতেই হুয়াওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের চীনে এনেছে। সব সময় মনে রাখতে হবে, উদ্ভাবনী বিজ্ঞানের জন্য আমাদের ভালো বিজ্ঞানী দরকার। আর ভালো বিজ্ঞানী হওয়া নির্ভর করে তাদের ভালো কাজের ভিত্তির ওপর। বিজ্ঞান ও নতুন উদ্ভাবনই আধুনিক বিশ্বের মূল চালিকাশক্তি। আর হুয়াওয়ে নতুন উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে এই চালিকাশক্তি তৈরি করছে। অগ্রসরমান প্রযুক্তি, উন্নত মানের গবেষণা ও সেবাই হুয়াওয়ের সফলতার মূলমন্ত্র।
অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্টের বেইজিং অফিসের পরিচালক ঝাও জিয়াওবিন বলেন, সিডস ফর দ্য ফিউচার শিক্ষার্থীদের কারিগরি দক্ষতা ও কর্মক্ষেত্রের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে। হুয়াওয়ে টেলিকম, আইটি ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রগুলোয় শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বিকাশে সহায়তা করার জন্য একটি রোল মডেল হয়ে উঠছে। আমরা আশা করি, উন্নত প্রযুক্তিগত অবকাঠামো নির্মাণের জন্য আরও অনেক প্রতিষ্ঠান আমাদের অনুসরণ করবে।

হুয়াওয়ে
হুয়াওয়ে বিশ্বের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিতকরণ ও উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি উন্নত ও সংযুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলা এর উদ্দেশ্য। গ্রাহককেন্দ্রিক নতুনত্ব ও উš§ুক্ত অংশীদারিত্ব দ্বারা পরিচালিত এ প্রতিষ্ঠানটি একটি পরিপূর্ণ আইসিটি সমাধান পোর্টফোলিও প্রতিষ্ঠা করেছে। হুয়াওয়ে বিশ্বব্যাপী ৫০০টির বেশি মোবাইল ফোন অপারেটরদের প্রায় তিন বিলিয়ন গ্রাহকের ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক পণ্য, সমাধান ও সেবা দিচ্ছে। ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত বিশ্বের ১০০ রাজধানী শহরে ৩৬০টি এলটিই বাণিজ্যিক নেটওয়ার্ক নির্মাণের মাধ্যমে হুয়াওয়ে টেলিকম শিল্পে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। অপারেটররা যেন পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কমিয়েও সর্বোচ্চ মানের নেটওয়ার্ক সেবা দিতে পারে, সেজন্য হুয়াওয়ে উদ্ভাবনী প্রযুক্তি তৈরি ও উন্নয়নে নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ১৭০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে সেবা দিচ্ছে, যা বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যার সমান। এক লাখ ৮০ হাজার কর্মী নিয়ে ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সমাজ তৈরির লক্ষ্যে হুয়াওয়ে কাজ করে চলেছে।