নিজস্ব প্রতিবেদক: হৃদরোগের চিকিৎসায় ব্যবহƒত যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দুটি প্রতিষ্ঠানের তিন ধরনের স্টেন্টের দাম কমানো হয়েছে। প্রতিটিরই ভিত্তিমূল্য ১০০ ডলারের বেশি করে কমছে। এর মধ্যে দুটি স্টেন্টের নতুন দাম আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এবং আরেকটির দাম পরে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
গতকাল রোববার সংবাদ সম্মেলনে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ সংবাদ সম্মেলেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাবোট ল্যাবরেটরিজ, বোস্টন সায়েন্টিফিকÑএই দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে তাদের। সেখানে হার্টের চিকিৎসায় ব্যবহƒত স্টেন্টের (রিং নামে পরিচিত) দাম কমানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আলোচনার পর দুটি প্রতিষ্ঠান তাদের তিনটি স্টেন্টের দাম কমাতে সম্মত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান অ্যাবোটের তৈরি স্টেন্ট জায়েন্স প্রাইমের ভিত্তিমূল্য ৫৬১ ডলার থেকে ৪২৫ ডলার করা হয়েছে, এক্সপেডিশনের বর্তমান ভিত্তিমূল্য ৮৩০ ডলার থেকে কমিয়ে ৬০০ ডলার করা হবে। আর বোস্টন সায়েন্টিফিকের প্রোমাস প্রাইমার নামে একটি স্টেন্টের ভিত্তিমূল্য ৫৭০ ডলার থেকে কমে ৪৭০ ডলার হবে।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘এক্সপেডিশনের দাম সেপ্টেম্বরেই কমবে না। প্রতিষ্ঠানটি পর্যায়ক্রমে দাম কমিয়ে ৬০০ ডলারে নিয়ে আসবে।’
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, স্টেন্টের দাম কমানোর জন্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছে ডিজিডিএ। সংবাদ সম্মেলনের আগে রোববারও তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়।
ইউসুফ বলেন, তাদের বোঝানো হয়েছে, এসব স্টেন্টের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলো এসব স্টেন্ট ভারতে আরও কম দামে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, আপনারা ভারতে এই দামে দিতে পারলে আমাদের দিতে পারবেন না কেন? তাদের যুক্তি ভারতে তাদের অনেক বড় বাজার, যেখানে খরচ কম। আমাদের এখানে বাজার ছোট বলে তাদের পরিচালনা ব্যয় বেশি হয়ে যায়। পরে আমরা বলেছি, আপনারা যদি দাম না কমান তাহলে আমরা অন্য দেশের অন্য প্রোডাক্ট নিয়ে আসব, আপনাদের প্রোডাক্টগুলো আমরা এনকারেজ করব না। হƒদরোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে তাদের চাপ দিয়েছি দাম কমাতে। এরপর তারা সম্মত হয়েছেন।’
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, স্টেন্টের ভিত্তিমূল্যের সঙ্গে ভ্যাট, ট্যাক্স, মুনাফাসহ আরও ৪২ শতাংশ অর্থ যোগ করে গ্রাহক পর্যায়ে দাম ঠিক করা হয়। সে জায়গায়ও খরচ আরও কিছুটা কমানোর চেষ্টা করছেন তারা।
তিনি বলেন, ‘সরকারের ট্যাক্স, বিডিএস ও টিডিএস কিছুটা কমলে প্রাইস অনেক কমবে। এছাড়া ডিস্ট্রিবিউটরদের খরচ এবং হাসপাতাল যেটা রাখে, সেটাও যেন কমানো হয় সেজন্য আমরা মিনিস্ট্রির সঙ্গে কথা বলব। এটা হলে মানুষ আরও কম দামে স্টেন্ট পাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে মেজর জেনারেল ইউসুফ আরও জানান, অ্যাবোটের তৈরি স্টেন্ট সিনার্জির দাম এক হাজার ২০০ ডলার থেকে কমিয়ে ৯০০ ডলার এবং প্রোমাস এলিটের দাম ৯০০ ডলার থেকে কমিয়ে ৬০০ ডলার করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলেছেন, তারা তাদের প্রধান কার্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন।