হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবার অপচয় বন্ধ হোক

খাদ্য  মানুষের মৌলিক অধিকার। বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের কোনো বিকল্প নেই হোক তা মানুষ, হোক তা অন্য জীব। খাদ্য দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধিসাধন ও পরিপূর্ণভাবে গড়ে উঠতে সাহায্য করে। মানুষের অর্থ উপার্জন, রাতদিন শত কষ্ট এবং হাজারো ব্যস্ততার মাঝে ছুটে চলার একমাত্র কারণ মৌলিক চাহিদা পূরণ করা। ধনী থেকে দরিদ্র সবাই কাজের জন্য ছোটে, কারণ পরিবারের সবার মুখে দু’মুঠো খাবারের জোগান দিতে হবে। আমাদের দেশের সমাজ বাস্তবতায় ধনী ও গরিব দুই শ্রেণির দিকে তাকালে দেখা যায় বিস্তর ব্যবধান। একদল শুধু দুবেলা খাবারের জন্য রাতদিন শ্রম দিচ্ছে, অন্যদল বিলাসিতা আর অপচয় করে নষ্ট করছে অর্থ।

শহরে কিংবা গ্রামে সর্বত্রই দেখা যায়, প্রচুর খাবার নষ্ট হচ্ছে, ফেলে দেয়া হচ্ছে ডাস্টবিনে বা ময়লাযুক্ত নর্দমায়। শহরে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত কত খাবার নষ্ট হচ্ছে রেস্টুরেন্টে, কিংবা কোনো বিয়ে, সুন্নতে খাতনা বা যেকোনো ধরনের আচার-অনুষ্ঠানে। শহরের সব হোটেল-রেস্তোরাঁয় প্রতিদিন গ্রাহকরা দামি সব খাবারের অর্ডার করে। এর কম অংশ খেয়ে বাকি খাবার রেখে দেয়া একধরনের ভদ্রতা। খুব কমসংখ্যক গ্রাহকই সম্পূর্ণ খাবার খেয়ে থাকে।

শহরে প্রতিদিন চোখে পড়ে ডাস্টবিন থেকে কিছু ছিন্নমূল মানুষ, পথচারী ও পথশিশু খাবার কুড়িয়ে খাচ্ছে। কারণ তাদের পেটে খাবার নেই, মুখে আহার নেইÑক্ষুধার তাড়নায় সে বাধ্য হয় সেই কাক ও কুকুরের সঙ্গে খাবারগুলো কুড়িয়ে খেতে। কিন্তু কেন এমন হবে? আমরা সবাই তো মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব (আশরাফুল মাখলুকাত)। প্রচুর টাকা আছে বলে মনমতো অপচয় করা হয়। অথচ আমাদের চারপাশে হাজারো ছিন্নমূল মানুষ আছে, পথচারী ও পথশিশু আছে, যারা চাইলেই একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারি। চাইলেই এই মানুষগুলোর মুখে হাসি ফোটাতে পারি। এই মানুষগুলোর মুখে হাসি ফুটলে সৃষ্টিকর্তাও খুশি হন। প্রতিটি ধর্মে মানুষকে সাহায্য-সহযোগিতা, খাওয়ানো-পরানো সার্বিক দিক থেকে সাহায্যের কথা বলা আছে। অসহায় ও দরিদ্র  মানুষ ভালো রেস্টুরেন্ট বা হোটেলে খেতে পারে না। শহর কিংবা গ্রামে প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো অনুষ্ঠান হয়ে থাকে, যেখানে প্রচুর পরিমাণ খাবার ফেলে দেয়া হয়। এ খাবার অসহায়, গরিব ও ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেয়া গেলে তাদের অভুক্ত থাকতে হয় না। রাষ্ট্রে মানুষের জীবনের প্রকৃত উন্নয়ন হলে শত শত মানুষ অনাহারে রাস্তাঘাটে শহরের আনাচে-কানাচে বস্তিতে না খেয়ে পড়ে থাকত না। হোটেল-রেস্তোরাঁয় বেঁচে যাওয়া খাবার অভুক্ত গরিব মানুষের মধ্যে বিতরণের কোনো উদ্যোগ নেয়া যায় কি না, তা ভেবে দেখা উচিত।

লুৎফর রহমান লাভলু

শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০