শেয়ার বিজ ডেস্ক: করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারী ছুটি এবং লকডাউন চলায় দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ বাসার বাইরে যেতে পারছে না, করতে পারছে না জীবন জীবিকার দৈনন্দিন কাজ। রাজধানীসহ সারাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে।
অনেক মানুষ হয়েছেন কর্মহীন। এর মধ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। একদিকে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক, অন্যদিকে অর্থাভাব। এতে সাধারণ মানুষ অনেকটাই দিশেহারা। এ পরিস্থিতিতে সর্বসাধারণের পক্ষে বাসাভাড়া দিয়ে নগরজীবনে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে অনেক বাড়ির মালিকের পরিবার শুধুমাত্র বাড়ি ভাড়ার উপরেই নির্ভরশীল। তাদের অনেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এবং ভাড়ার টাকা দিয়ে ব্যাংকের কিস্তি পরিশোধ করেন।
আকস্মিক এই অর্থনৈতিক টানাপোড়নে বাসা ভাড়া বিষয়ে তাই একটি বাস্তবসম্মত ও যৌক্তিক সমাধান প্রয়োজন। বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়া উভয় পক্ষের সুবিধার কথা চিন্তা করে দুর্যোগকালীন সময়ে বাসা ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে পুনঃনির্ধারণের প্রস্তাব করছে নাগরিক সংগঠন নাগরিক বিকাশ ও কল্যাণ (নাবিক)। নাবিকের আহ্বায়ক ব্যরিস্টার শিহাব উদ্দিন খান ও সদস্য সচিব আবদুল্লাহ হাসান এক যৌথ বিবৃতিতে একথা জানান।
নাগরিক বিকাশ ও কল্যাণ (নাবিক)-এর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আহ্বানের পাশাপাশি এ প্রসঙ্গে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সামাজিক গণমাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস ক্যাম্পেইন ঘোষণা করা হয়েছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সামাজিক গণমাধ্যমে এক লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছার জন্য এ ক্যাম্পেইন বা প্রচারণা ঘোষণা করা হয়েছে। নাবিকের পেইজে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত স্ট্যাটাসটি (#) হ্যাশট্যাগ দিয়ে কপি করেই এ ক্যাম্পেইনে অংশ নিতে পারবেন নেটিজেনরা।
এ প্রসঙ্গে নাবিকের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবসমূহ নিম্নরূপ:
১. সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসমূহ সরকার ঘোষিত করোনার দুর্যোগকালীন সময় পর্যন্ত বাড়ির মালিকদের হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ করতে পারে।
২. যেসব বাড়ির মালিকদের ভাড়াকৃত বাড়ি নির্মাণের বিপরীতে ব্যাংক ঋণ আছে, তাদের ব্যাংক ঋণের কিস্তি অন্তত তিন থেকে ছয় মাসের জন্য সুদ মুক্ত অবস্থায় স্থগিত করা যেতে পারে। এ বিষয়ে সরকারের তরফে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা উচিত।
৩. সরকার ঘোষিত করোনার দুর্যোগকালীন সময় পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো থেকে পাানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল মওকুফ করার জন্য সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
৪. দুর্যোগকালীন সময়ে বাড়িভাড়া অর্ধেক কমিয়ে আনা যেতে পারে। এবং ক্ষেত্রবিশেষে এই দুর্যোগকালীন সময়ে ভাড়া সংক্রান্ত অপারগতায় মানবিক কারণে বাড়ির মালিক তার ভাড়াটিয়াকে প্রয়োজনীয় সময় প্রদান করবেন বলে নাবিক প্রত্যাশা করে। কোন ভাড়াটিয়া স্ব-ইচ্ছায় সম্পুর্ণ ভাড়াও পরিশোধ করতে পারবেন।
একটি নাগরিক সংগঠন হিসেবে নাবিক বিশ্বাস করে যে, প্রথম তিনটি প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে বাসা ভাড়া অর্ধেক করে দিলেও বাড়ির মালিকরা খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। উপরন্তু এই বিশেষ সাময়িক ব্যবস্থাপনায় বিশাল অংশের জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক জীবন অনেকাংশেই সুরক্ষিত হবে। নাবিক উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো অনতিবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছে।
উল্লেখ্য, নাগরিক সংগঠন হিসেবে নাবিক করোনার কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের কাছে সামাজিক সহযোগিতা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে আসছে। বিজ্ঞপ্তি